পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রবণতা

মুনাফা তুলে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। এতে প্রথম দুই কার্যদিবসে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গতকাল ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বাড়লেও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার সিএসইতে গতকাল সূচক বাড়লেও দৈনিক লেনদেন কমেছে। দেশের দুই পুঁজিবাজারেই গতকাল মিশ্র প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। টানা উত্থানের কারণে অনেক বিনিয়োগকারীই শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর প্রথম মিনিট পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। এরপর কিছুটা ছন্দপতন ঘটে। তবে ১১ মিনিট পরেই আবারো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। লেনদেনের ৩০ মিনিট পর থেকেই শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়তে থাকে। এতে সূচকে বড় পতন ঘটে। এর আধা ঘণ্টা পরেই সূচক বেড়ে দিনের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে। দিনভর ওঠানামা শেষে গতকাল দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৪০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল হাজার ৪০২ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল পয়েন্ট বেড়ে হাজার ২৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ২৭১ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৩৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৩৯০ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি), গ্রামীণফোন পূবালী ব্যাংকের শেয়ারের।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে টানা বেশ কয়েকদিন ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে ছিল দেশের পুঁজিবাজার। এতে অনেক বিনিয়োগকারীর মধ্যে শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তোলে নেয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে ডলারের বিনিময় মূল্য জ্বালানির সরবরাহ কিছুটা স্থিতিশীল হলেও বিষয়ে এখনো অনেকের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা ঊর্ধ্বমুখী বাজারের সুবিধা নিয়ে তাদের পোর্টফোলিওতে থাকা কিছু শেয়ার বিক্রি করে নগদ অর্থ হাতে রাখছেন। লেনদেনের শুরুতে সূচকে ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হলেও দ্বিতীয়ার্ধে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এতে শুরুর দিকে সূচকের যে উত্থান ছিল সেটি শেষ পর্যন্ত বজায় থাকেনি।

ডিএসইতে গতকাল হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ১০৫ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১২৩টির, কমেছে ১৮৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭১টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। ১০ দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল ওষুধ রসায়ন খাত। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে ভ্রমণ অবকাশ খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে দশমিক শতাংশ।

সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ২৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ২৮২ পয়েন্ট। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৮২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ৮২৩ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩১০টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ১৩৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৬১টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ৪২ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৫৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন