লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে পাওয়ার গ্রিড

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) ১৯৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ৩৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা নিট লোকসান হয়েছিল কোম্পানিটির। মূলত বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত ক্ষতি কমার কারণে কোম্পানিটি মুনাফায় ফিরেছে। 

পাওয়ার গ্রিডের চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৬১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল ১ হাজার ৭৬৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১১ শতাংশ। 

চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির আর্থিক ব্যয় হয়েছে ৬১৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সুদ বাবদ ব্যয় ৪৬৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত ক্ষতি ১৪৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির আর্থিক ব্যয় হয়েছিল ১ হাজার ২৮৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সুদ বাবদ ব্যয় ছিল ৩৭৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত ক্ষতি ছিল ৯১১ কোটি ১০ লাখ টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৭৭ পয়সা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৪ টাকা ৬৬ পয়সা। এ বছরের ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৭৩ টাকা ৫০ পয়সায়।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরে পিজিসিবির আয় হয়েছে ২ হাজার ৪৪০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ২ হাজার ৩৩৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে বিনিময় হার ওঠানামার কারণে কোম্পানিটির ১ হাজার ২৭৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। যেখানে আগের হিসাব বছরে এ খাতে ক্ষতি হয়েছিল ৫৩৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৬২৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটির ১২১ কোটি ২৪ লাখ টাকা নিট মুনাফা হয়েছিল। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৮ টাকা ৮৯ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৭০ পয়সা।

সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে উদ্যোক্তা বাদে অন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পিজিসিবি। লোকসান হওয়ার কারণে কোম্পানিটি সংরক্ষিত আয় থেকে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ফলে আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সংরক্ষিত আয় কমে ১০৪ কোটি ৫২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা আগের হিসাব বছরে ছিল ৭৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে আসা পাওয়ার গ্রিডের অনুমোদিত মূলধন ১৫ হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৮ হাজার ৫৫৪ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১০৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৭৫ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে। 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত বৃহস্পতিবার পাওয়ার গ্রিডের শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ৪১ টাকা ৬০ পয়সা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন