র‍্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা গর্হিত কাজ —প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে র্যাবের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেন ছবি: পিএমও

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে গর্হিত কাজ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের দেশে স্বীকৃত খুনিদের স্থান দেয় আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

গতকাল র‍্যাবের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। র‍্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। সময় উপস্থিত ছিলেন আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ অন্যরা।

বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ অপরাধে জড়ালে সরকারের পক্ষ থেকে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা হয় বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো যারা বিনা কারণে, বিনা দোষে র‍্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু ধরনের অপরাধ করলে কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয় না।

সময় যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি হত্যার ঘটনার প্রসঙ্গ টানেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অর্থাৎ সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে কেউ অপরাধ করলেও শাস্তি দেয়া হয় না। কিন্তু পৃথিবীতে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, এখানে কেউ অপরাধ করলে আমরা শাস্তির বিধান করি।

শেখ হাসিনা বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বন্দিদের উদ্ধার করে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়। জলদস্যু, বনদস্যু বা মাদক, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সাফল্য অর্জন করেছে। এসব সাফল্যে কেউ দুঃখ পেয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কিন্তু বাংলাদেশ যে এসব ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে, সেটাই সত্য। সেক্ষেত্রে ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।

দেশের কিছু মানুষ বিদেশে বসে অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যারা বিদেশে বসে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা কিন্তু অপরাধী। তারা কোনো না কোনো দোষে হয়তো চাকরি হারিয়েছে বা দেশ ছেড়েছে। তারাই এখন দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধাপরাধীদের যেমন স্থান হয়েছে, জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিদেরও হয়েছে। তাদের ওই দেশের নাগরিক করে নেয়া হয়েছে। আমরা বারবার তাদের অনুরোধ করছি, প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিচ্ছি, একের পর এক প্রেসিডেন্ট আসছেন, আমরা তাদের কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছি। জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে আমরা আহ্বান করছি, এরা অপরাধী, শিশু নারী হত্যাকারী, খুনি; ১৫ আগস্ট হত্যা করেছে। তাদের আমাদের দেশে ফেরত দিতে হবে। কিন্তু তারা অপরাধীদের রক্ষা করে, তাদের দেশে স্থান দেয়। আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

র‍্যাব সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ জাতির উন্নয়নে আপনাদের অবদান অপরিসীম। কারণ দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যদি সুষ্ঠু না থাকে, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদমুক্ত না থাকে, তাহলে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হয় না। আজকে সবার প্রচেষ্টায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো দেশে বিনিয়োগের জন্য পূর্বশর্তই হচ্ছে সেখানে যেন জঙ্গিবাদ না থাকে, সন্ত্রাস না থাকে এবং কোনো অপরাধ না থাকে। বিনিয়োগের পূর্বশর্ত হচ্ছে সুশৃঙ্খল সামাজিক ব্যবস্থা। সেটা আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। এক্ষেত্রে র‍্যাবের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। অবস্থা অব্যাহত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন