মিশ্র প্রবণতায় পুঁজিবাজার

সূচক বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা চার কার্যদিবস ধরে ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে দেশের পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে গত সোমবার ১২ দিন পর দৈনিক গড় লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। অবশ্য এর একদিন পরেই গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন কমেছে ১০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমার কারণে এক্সচেঞ্জটির দৈনিক গড় লেনদেন কমে গেছে। লেনদেন কমলেও ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স কিছুটা বেড়েছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমলেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গতকাল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার কেনার প্রবণতা দেখা গেছে বেশি। অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশকে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা তুলে নিতে দেখা গেছে। ওমিক্রনের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের কিছুটা হলেও শঙ্কিত করে তুলেছে। এতে আগের দিনের তুলনায় গতকাল বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে গেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরুতেই পয়েন্ট হারাতে থাকে সূচক। ১০ মিনিট পর সূচক কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও কিছুক্ষণ পরেই আবারো নিম্নমুখিতা দেখা যায়। একসময় আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়েন্ট কমে যায় সূচক। দিনভর উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত গতকাল দিনশেষে প্রায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৮৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স, যা আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৮৮২ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, রেনাটা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালসের শেয়ার।

ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিনশেষে প্রায় পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ৪৫১ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে পয়েন্ট কমে গতকাল হাজার ৫৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৫৭৬ পয়েন্টে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে হাজার ১৮২ কোটি টাকা। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৮টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ১৬৭টির, কমেছে ১৮০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩১টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ২০ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ২০ শতাংশ দখলে নিয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সাধারণ বীমা খাত। গতকাল জীবন বীমা খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে নেতিবাচক রিটার্নের শীর্ষে ছিল ভ্রমণ অবকাশ খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসসি, ফরচুন সুজ, অ্যাকটিভ ফাইন, তৌফিকা ফুড অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম, জেনেক্স ইনফোসিস, পাওয়ার গ্রিড, সোনালী পেপার, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস জিএসপি ফাইন্যান্স।

গতকাল ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিএসসি, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জাহিন টেক্সটাইল, অ্যাকটিভ ফাইন, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস তৌফিকা ফুড অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম।

অন্যদিকে গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর কমার শীর্ষে থাকা কোম্পানির মধ্যেরয়েছে আইসিবি এএমসিএল তৃতীয় এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, রিলায়েন্স ওয়ান দ্য ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), হামিদ ফ্যাব্রিকস, শাহাজীবাজার পাওয়ার, মুন্নু ফ্যাব্রিকস, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড বেক্সিমকো লিমিটেড।

অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ১০৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১২ হাজার ১০৫ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৯২টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩০টির, কমেছে ১২৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন