শ্রীলংকায় বন্দর টার্মিনাল উন্নয়নও চীনের ঝুলিতেই

বণিক বার্তা ডেস্ক

শ্রীলংকায় আরো একটি বন্দরকেন্দ্রিক মেগা প্রজেক্টের কাজ পেতে যাচ্ছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। চলতি সপ্তাহেই প্রতিষ্ঠানটিকে কলম্বোর ইস্টার্ন কনটেইনার টার্মিনাল (ইসিটি) উন্নয়নের কাজ দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা। লংকা সরকারের পক্ষ থেকে গতকালই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর আগে ২০১৯ সালে কলম্বোর ইস্টার্ন কনটেইনার টার্মিনাল (ইসিটি) শীর্ষক প্রকল্পের নির্মাণকাজ নিয়ে জাপান ভারতের সঙ্গে প্রাথমিক একটি চুক্তি করেছিল শ্রীলংকার বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির দিকে ওই চুক্তি বাতিল বলে ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন সরকার।

এখন পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোয় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আংশিকভাবে নির্মিত টার্মিনালের উন্নয়নকাজে কমপক্ষে ৫০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে।

গত কয়েক বছরে রাজাপাকসে পরিবারের শাসনাধীন শ্রীলংকায় চীনের প্রভাব উপস্থিতি ক্রমেই বেড়েছে। একের পর এক মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রীলংকার বিনিয়োগ অবকাঠামো খাতে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে চীন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অংশ হিসেবে ভারত মহাসাগরে মেরিটাইম সিল্ক রোড গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে চীনের। বেইজিংয়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে সবচেয়ে বড় মিত্র হয়ে এগিয়ে এসেছেন রাজাপাকসে ভাইয়েরা। তাদের আনুকূল্যেই দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপদেশটিতে নিজের অবস্থান ক্রমেই জোরালো করে তুলেছে বেইজিং। চীন এরই মধ্যে শ্রীলংকার হাম্বানটোটা বন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে তুলে নিয়েছে। সুযোগ পেয়েছে পোর্ট সিটি কলম্বোসহ বেশ কয়েকটি অবকাঠামো প্রকল্পে বড় বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসারও। অবকাঠামোগত প্রকল্প ছাড়াও নানা প্রয়োজনে বেইজিংয়ের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ ঋণ নিয়েছে কলম্বো। দিনে দিনে চীনা ঋণের প্রতি কলম্বোর নির্ভরতা বেড়েছে।

পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম কূটনৈতিক মহল নির্ভরতাকে আখ্যা দিচ্ছেন ঋণ ফাঁদ হিসেবে। এর উদাহরণ দিতে গিয়ে তারা বারবার বলছেন হাম্বানটোটা বন্দরের কথা। ঋণের ভার কমাতে গিয়ে ২০১৭ সালে চীনা একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্দরটি ইজারা দেয় শ্রীলংকা সরকার। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, মূলত চীনা ঋণের বেড়াজালে আটকে গিয়েই ৯৯ বছরের জন্য বন্দরটি ইজারা দিতে বাধ্য হয়েছে কলম্বো।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন