অর্থনীতি সমিতির আলোচনা

বরাদ্দ বাড়িয়ে আয়-শিক্ষা ও সামাজিক বৈষম্য দূর করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে বৈষম্যপূর্ণ অর্থনীতি ব্যবস্থা চলছে। এটি মানবসভ্যতার জন্য অবমাননাকর হুমকিস্বরূপ। অবিলম্বে বাজেটে বরাদ্দা বাড়িয়ে আয়, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সব ধরনের আর্থসামাজিক বৈষম্য দূর করা জরুরি। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাতের সম্প্রতি প্রকাশিত গ্রন্থ বড় পর্দায় সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্র: ভাইরাসের মহাবিপর্যয় থেকে শোভন বাংলাদেশের সন্ধানে ওপর একক আলোচনায় এসব কথা বলেন অর্থনীতিবিদ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মহিউদ্দিন খান আলমগীর।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ অর্থনীত সমিতির সহসভাপতি এজেডএম সালেহ। আলোচনা শেষে ওয়েবিনারে বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের উত্তর দেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর। লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ লিমিডেটের সৌজন্যে আয়োজিত ওয়েবিনারটির গণমাধ্যম সহযোগী ছিল বণিক বার্তা।

বই আলোচনায় মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, অধ্যাপক আবুল বারকাত যে বিশ্লেষণ করেছন, বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে এত নিখুঁত বিশ্লেষণ কেউ করেননি। এসব বিশ্লেষণ সামনে রেখে দেশের আর্থসামাজিক নীতি গ্রহণ করলে উন্নয়নের রোল মডেলে দেশ আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

আলোচিত বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আর্থিকীকৃত পুঁজিবাদ ক্ষমতাকে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। অর্থাৎ রাজনীতি সরকার থেকে অভিবাসিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিপর্য নেমে এসেছে। মানুষের মাঝে হতাশা বিষণ্নতা। এমন পর্যায়ের প্রকৃতির প্রতি আনুগত্য অর্থাৎ বৈষম্যমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবি। এর বাইরে শোভন পৃথিবী দেখার বিকল্প কোনো পথ নেই।

তিনি বলেন, লেখকের বক্তব্য পাঠককে মনে করিয়ে দেয়, গত ১০০ বছরের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণের ফলাফল হলো ধনতান্ত্রিক দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রের কতিপয় জনসমর্থিত উপকরণ গ্রহণ করে সমৃদ্ধ হয়েছে। এতে শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবা বিস্তারের মাধ্যমে বৈষম্য দূর হয়েছে এবং সামাজিক নিরাপত্তার পরিধি বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, . বারকাত তার বইয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন দিকের সংস্কার প্রস্তাব করেছেন। তার প্রস্তাবগুলো জ্ঞানগর্ভ প্রস্তাব সন্দেহ নেই। কিন্তু তার সব প্রস্তাব আমরা গ্রহণ করতে পারি না। যেমন তার কথা মেনে বাংলাদেশের সার্বভৌত্ব রক্ষার দায়িত্ব পেশাদার পারদর্শী সামরিক বাহিনী বিলুপ্ত করে জনগণের ওপর অর্পণ করা য়ায় না। এছাড়া সমাজে যে ধরনের ব্যাংক আর্থিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তা বিলুপ্তি করে সঞ্চয় বিনিয়োগ বাড়ানোও সম্ভব নয় বলে আমরা মনে করি।

মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, সার্বিকভাবে আমি . বারকাতের বইটির প্রশংসা করছি। তিনি আমাদের অর্থ ব্যবস্থার অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি বড় পর্দার সামনে নিয়ে এসেছেন। এসব সমস্যা দূর করে উৎপাদনের ক্ষেত্র বিস্তৃত করতে পারলে সমাজে সাম্য ফিরে আসবে কোনো সন্দেহ নেই। লেখক বড় পর্দায় বাংলাদেশের সংস্কারের তালিকা প্রণয়ন করেছেন। তার বিশ্লেষণে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্র ফ্যাসিবাদ, ধর্মভিত্তিক বর্ণবাদ শোভন রাষ্ট্র বিনির্মাণে বড় প্রতিবন্ধক। কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে অনুকূলে গ্রন্থাকারের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সয়ংক্রিয়ভাবে দরিদ্র মানুষের দারিদ্র্য কমায় না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন