রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বিশ্বনেতাদের সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের সম্মানজনক শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবর্তনে বিশ্বনেতাদের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে দেশ এত বিপুলসংখ্যক মানুষের আশ্রয়স্থল হতে পারে না। বিশ্ব সম্প্রদায়কে অনুরোধ করব, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের তাদের মাতৃভূমিতে সম্মানজনক শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আমাদের সহায়তা করুন।

গতকাল নবম মস্কো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিয়ে এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, চার বছরের বেশি সময় ধরে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এখন তারা বাংলাদেশ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। একটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যকার সংঘাত আন্তঃদেশীয় নিরাপত্তা সমস্যার জন্ম দেয়।

সরকারপ্রধান বলেন, এখন নিরাপত্তা ধারণার মধ্যে সামরিক হুমকি, ব্যক্তির আর্থসামাজিক রাজনৈতিক প্রয়োজন, স্বেচ্ছায় গণঅভিবাসন, পরিবেশগত নিরাপত্তা এবং অন্যান্য অপ্রচলিত নিরাপত্তা হুমকি অন্তর্ভুক্ত। এমনকি সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র, সাইবার অপরাধ, আঞ্চলিক কোন্দল পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ সমস্যা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে সন্ত্রাস চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি ভিডিও বার্তায় ইসরায়েল ফিলিস্তিনের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।

কভিড-১৯ মহামারী প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সময়ে এটি বিশ্বের অন্যতম বড় সমস্যা। এটি শুধু লাখ লাখ জীবনই নেয়নি, অর্থনীতিকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবিকাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এর মধ্যেও সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার মহামারীবিরোধী লড়াইয়ের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা দেখিয়েছে।

সময় যেকোনো মূল্যে দেশের সব নাগরিককে বিনা মূল্যে কভিড-১৯ টিকার আওতায় আনতে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সম্ভাব্য সব উৎস থেকে সরকার টিকা সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার টিকার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বাংলাদেশের টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশকে যদি টিকা উৎপাদন চেইনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়, তাহলে আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়কে সহায়তাও করতে পারব।

ভিডিও বার্তায় জলবায়ু সমস্যাকে বড় ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইস্যুতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের যথাযথ মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। জ্ঞান দক্ষতা বিনিময় এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিশ্ব সম্প্রদায় জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন