নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষার উদ্বেগের কারণে শেয়ার করা ক্যাব ও গণপরিবহনের পরিবর্তে সেকেন্ড হ্যান্ড বা ব্যবহৃত গাড়ি ও মোটরবাইক কেনার দিকে ঝুঁকছে ভারতীয়রা। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে তারা নতুন গাড়ি কেনা থেকেও বিরত থাকছে। গত কয়েক মাসে ব্যবহৃত গাড়ির শীর্ষ বিক্রেতা মারুতি সুজুকি ও মাহিন্দা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা এবং ব্যবহৃত গাড়ির অনলাইন বাজার ওএলএক্স ও কুইকার সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ির তুমুল চাহিদা দেখেছে।
মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়া লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক শশাঙ্ক শ্রীবাস্তব বলেন, মানুষ স্বল্প বিকল্পের জন্য ব্যবহৃত গাড়ি কেনার বিষয়টি বিবেচনা করছে। মহামারীর কারণে তারা গণপরিবহন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে। ফলে ব্যবহৃত গাড়িগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধান ও আগ্রহের মাত্রা বেড়েছে।
ভারতের বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতারা ব্যবহৃত গাড়ি কেনাবেচার জন্য মারুতি সুজুকি ট্রু ভ্যালু নামে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। শ্রীবাস্তব জানান, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ব্যবহৃত গাড়ি কেনার জন্য অনুসন্ধানের স্তর ২৪ শতাংশ বেড়েছে।
ব্যবহৃত গাড়ি কেনাবেচার আরেকটি সংস্থা মাহিন্দ্রা ফার্স্ট চয়েজও একই ধরনের প্রবণতা দেখছে। সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশুতোষ পান্ডে বলেন, চাহিদা বড়ছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ১০-১৫ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। আমাদের তালিকাভুক্ত প্রতিটা গাড়ির বিষয়ে আগ্রহের পরিমাণ এখন ৩০ শতাংশ বেশি। গ্রাহকরা ফোন দিচ্ছেন। ডিলাররাও সম্ভাব্য গ্রহকদের জন্য টেস্ট ড্রাইভ ট্র্যাক স্থাপন করেছে, যদিও গ্রাহকরা হেঁটে হেঁটেও গাড়িগুলো দেখছে।
অনলাইন কেনাবেচার সাইট ওএলএক্স ও কুইকার গত কয়েক মাস থেকে একই বৃদ্ধি দেখছে। ওএলএক্স সাইটে গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় আগস্টে ব্যবহৃত গাড়ির চাহিদা ১৩৩ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে কুইকারে দুই লাখ রুপি বা তার চেয়ে কম দামের সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়িগুলোর চাহিদা ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। কুইকার বাইকেও একই ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। দিল্লিতে জানুয়ারি মাসের তুলনায় জুলাই মাসে ব্যবহৃত বাইকগুলোর চাহিদা ১৮৩ শতাংশ বেড়েছে। সর্বাধিক সন্ধান করা ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে হোন্ডা অ্যাক্টিভা, রয়াল এনফিল্ড ও হিরো স্প্লেন্ডার।
গাড়ি কেনার এ প্রবণতা আসন্ন উৎসব মৌসুমেও অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ওএলএক্সের অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ অনুসারে, ৬১ শতাংশ গাড়ি ক্রেতা তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে একটি ব্যবহৃত গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছে।
তবে ব্যবহৃত গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। শশাঙ্ক শ্রীবাস্তব বলেন, ব্যবহৃত গাড়ির পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। লোকেরা তাদের পুরনো গাড়ি ধরে রেখেছে এবং আপাতত তারা এক্সচেঞ্জের অফার নিচ্ছে না। আশুতোষ পান্ডেও সরবরাহকে একটা বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
দ্য প্রিন্ট
