পদ্মায় চার মাস পর বসল ৩২ নম্বর স্প্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুতে আরেকটি স্প্যান বসানো হয়েছে গতকাল। গত জুনে এটি বসানোর কথা থাকলেও পদ্মায় পানি ও স্রোত বেশি থাকায় চার মাস পর এটি বসানো হলো। স্প্যানটি বসানো হয় সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারে (খুঁটি)। এর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুতে ৩২টি স্প্যান বসল। আর দৃশ্যমান অংশের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াল ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, ৩২তম স্প্যানটি গত শনিবার বসানোর কথা ছিল। কিন্তু দিনভর চেষ্টা করেও প্রবল স্রোতের কারণে বসাতে পারেননি তারা। গতকাল সকাল ৭টায় ফের স্প্যানটি স্থাপনের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় সাড়ে ৯টায়। তারও আগে গত ২৪ জুন বসানোর কথা ছিল ৩২তম স্প্যান। সে সময় বন্যায় পদ্মায় পানি বেশি ও স্রোত আরো বেশি থাকায় তা পিছিয়ে যায়। সর্বশেষ ৩১ নম্বর স্প্যানটি বসানো হয় গত ১০ জুন।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতুতে মোট ৪২টি পিয়ার হচ্ছে। এর মধ্যে ৪০টি নদীর ভেতর ও দুই পাড়ে দুটি। এসব পিয়ারের ওপর ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের মোট ৪১টি স্প্যান বসানো হচ্ছে। স্প্যানের অংশগুলো চীনে তৈরি হয়েছে। জাহাজে করে বাংলাদেশে আনার পর সেগুলো জোড়া লাগানো হয়েছে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। স্প্যানগুলো দিয়ে গঠিত হবে সেতুর নিচ তলা, যার মধ্য দিয়ে ট্রেন চলবে। ওপরের তলায় কংক্রিটের স্ল্যাবের ওপর চলবে মোটরযান।

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে সরকারের অন্যতম ফার্স্ট ট্র্যাকভুক্ত এ প্রকল্প। ২০০৭ সালের আগস্টে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছিল তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই সময় প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেতুর সঙ্গে রেলপথ যুক্ত করে প্রথম দফায় ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমানে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের অগ্রগতি ৯০ শতাংশের কাছাকাছি চলে এসে। আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ সেতুটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

পদ্মা সেতু যেদিন চালু হবে, সেদিন থেকেই সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চালানোর লক্ষ্য সরকারের। এজন্য ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন নির্মিত হচ্ছে আরেকটি প্রকল্পে। এতে ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। নকশায় নতুন জটিলতা প্রকল্পটির ব্যয় আরো বাড়িয়ে দেয়ার পরিস্থিতি তৈরি করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন