অক্সফোর্ডের বিশেষজ্ঞের মত

বেশির ভাগ মানুষেরই কভিড-১৯ ভ্যাকসিন লাগবে না

বণিক বার্তা ডেস্ক

অদৃশ্য এক ভাইরাস গোটা পৃথিবীকে যেন লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছে মানুষের সঙ্গে মানুষের সামাজিক যোগাযোগ। স্তব্ধ করে দিয়েছে অর্থনৈতিক কার্যক্রম। নিকট অতীতে গোটা পৃথিবী এভাবে কখনো থমকে গিয়েছিল বলে ইতিহাসে নেই। এখন পর্যন্ত কভিড-১৯ বিশ্বজুড়ে লাখের বেশি মানুষের প্রাণ নিয়েছে এবং কোটির বেশি মানুষকে সংক্রমিত করেছে। কয়েক মাসের অচলাবস্থার পর ঝুঁকি সত্ত্বেও কিছু কিছু দেশ লকডাউন শিথিল করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেছে এবং সে দেশগুলো পুনরায় ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হচ্ছে।

একদিকে লকডাউনের মতো বিধিনিষেধ দিয়ে ভাইরাসটির বিস্তার রোধ করার চেষ্টা হচ্ছে, অন্যদিকে ভাইরাসটি থেকে বাঁচতে বিশ্বজুড়ে শতাধিক ভ্যাকসিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এর মধ্যে কয়েকটি ভ্যাকসিনের মানব ট্রায়ালও শুরু হয়েছে। তবে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহামারী বিশেষজ্ঞ সুনেত্রা গুপ্ত মনে করছেন বেশির ভাগ মানুষেরই কভিড-১৯ ভাইরাসের ভ্যাকসিন বা টীকার প্রয়োজন হবে না। প্রয়োজন না হওয়ার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে কীভাবে লকডাউন দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়, সেটাও উল্লেখ করেছেন।

হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে অধ্যাপক গুপ্ত বলেন, যাদের স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা নেই বা যারা বয়স্ক বা দুর্বল নন, তাদের জন্য কভিড-১৯ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তাদের ক্ষেত্রে এটা সাধারণ ফ্লুর মতোই একটা ভাইরাস। এজন্য ভ্যাকসিন কার্যকর প্রমাণিত হলে সেটা দুর্বলদের সহায়তার জন্য ব্যবহার করা হবে। আমাদের বেশির ভাগকে করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই বলেও আশস্ত করেন তিনি।

এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারী কীভাবে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে, সেটা নিয়েও তিনি ধারণা দিয়েছেন। তিনি মনে করেন চলমান মহামারী স্বাভাবিকভাবেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে এবং ভাইরাসটি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো আমাদের জীবনের অংশ হয়ে থেকে যাবে। তিনি বলেন, আশা করি ইনফ্লুয়েঞ্জার থেকে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার কম। আমার মনে হয় করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করা মোটামুটি সহজ। এই গরমের শেষেই আমাদের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া যাবে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লকডাউনকে সচেতন পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনের পক্ষে নন। তিনি বলেন, লকডাউন হলো ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে মানুষদের দূরে রাখতে উন্নত সচেতন একটি ধারণা। তবে এটা দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান হতে পারে না।

সুনেত্রা গুপ্ত বলেন, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের দ্বিতীয় ঝড় হিসেবে যা বর্ণনা করা হচ্ছে, তা হলো মূলত একটি ভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলে পৌঁছার প্রথম ঝড়। তবে এমন কিছু দেশ রয়েছে, যারা সফলভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পেরেছে এবং এখন পুনরায় ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমস

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন