যুক্তরাষ্ট্রের ‘কাঠামোগত বর্ণবাদের’ নিন্দা ইউএনএইচসিআরের

বণিক বার্তা ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাঠামোগত বর্ণবাদের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাচলেট। একই সঙ্গে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশটিতে চলমান বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর অভূতপূর্ব আক্রমণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। খবর এএফপি।

মিশেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে সামনে এগিয়ে যেতে হলে বিক্ষোভের কেন্দ্রে যে কষ্ট রয়েছে তাকে বুঝতে হবে। একই সঙ্গে তা দূর করারও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। বিক্ষোভকারীরা নিরস্ত্র আফ্রিকান-আমেরিকান মানুষদের যাতে আর কখনই এভাবে হত্যা করা না হয়, সেজন্য আওয়াজ তুলেছে, তাদের কথা শুনতে হবে। তারা বলছে, পুলিশি সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে যে সর্বব্যাপী কাঠামোগত বর্ণবাদ সমাজের অবক্ষয়ের কারণ, তা শেষ হওয়া দরকার। সর্বোপরি মার্কিন কর্তৃপক্ষের আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনা প্রয়োজন।

মিশেলের মতে, ধরনের সংকট থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্পষ্ট গঠনমূলক নেতৃত্ব দরকার। তিনি বলেন, বিশেষ করে যে কোনো সংকটাবস্থায় একটি দেশের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যারা দ্ব্যর্থহীনভাবে বর্ণবাদের বিরুদ্ধাচরণ করবে। পাশাপাশি বুঝতে হবে, ঠিক কী কারণে জনগণ এতটা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। অবস্থায় তাদের কথা শুনতে হবে এবং সত্যিকার অর্থেই বৈষম্য দূর করবে এমন সব পদক্ষেপ নিতে হবে।

অথচ এমনই একটি সংকটময় পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঠিক যেন উল্টো পথে হাঁটছেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি সংকটের মোকাবেলায় রাষ্ট্রপতির ঐতিহ্যগত নিরাময়কারীর ভূমিকা প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিক্ষোভ দমনে তিনি নিজ দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের হুমকি দিয়েছেন। অস্বীকার করেছেন শক্তি প্রয়োগ করে শান্তিপূর্ণ র্যালি ছত্রভঙ্গ করার ঘটনাও। অবস্থায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিক্ষোভ দমনে নিশ্চিতভাবেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অপ্রয়োজনীয় শক্তি প্রয়োগ করেছে। বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনও রয়েছে। এতে দেখা গেছে, গুরুতর সহিংস আচরণ না করলেও বিক্ষোভকারী এমনকি সাংবাদিকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে। সবচেয়ে হতাশা উদ্বেগের বিষয় হলো, বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে পেশাগত দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আক্রমণ কিংবা গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন অন্তত ২০০ সাংবাদিক। সময় তাদের কাছে দৃশ্যমান পরিচয়পত্র থাকলেও তারা হেনস্থা থেকে রেহাই পাননি। অনেকেই পুলিশের মারধরে মারাত্মক আহত হয়েছেন।

মিশেল বলেন, যা ঘটেছে তা সাংবাদিকদের ওপর অভূতপূর্ব আক্রমণ ছাড়া আর কিছুই নয়। কিছু ক্ষেত্রে তাদের এমন সময় আক্রমণ কিংবা গ্রেফতার করা হয়েছে, যখন তারা লাইভে ছিলেন। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের মৌলিক নীতিগুলোর মধ্যে সংবাদমাধ্যমের মত প্রকাশের স্বাধীনতা অন্যতম। যে কোনো পরিস্থিতিতেই সাংবাদিকদের তাদের কাজ করার স্বাধীনতা দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই তারা যাতে আক্রমণ কিংবা নিপীড়নের শিকার না হন, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।

তবে একই সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা পরিহারের জন্য অনুরোধ করেছেন। কারণ এরই মধ্যে বিক্ষোভের জেরে বেশ কয়েকজন মানুষ মারা গেছেন। যার মধ্যে একজন আইনপ্রয়োগকারী এজেন্টও রয়েছেন। তাছাড়া অনেক স্থানে মানুষের সম্পদের যে ক্ষতি করা হচ্ছে, তা বন্ধের জন্য অনুরোধ করেন মিশেল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন