লালমনিরহাটে ভুয়া এনএসআই ও সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ২ যুবক আটক

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহকারী পরিচালকের ভুয়া পরিচয়ে আরিফুল ইসলাম সুজন (৩৩) এবং সাংবাদিক পরিচয়ে খাজা রাশেদ বাবু (২৬) নামে দুই যুবককে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। তারা লালমনিরহাটে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিডি ওমর ইবনে হাসানের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন।

লালমনিরহাট সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, আটক সুজন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের খাতাপাড়া এলাকার আতিয়ার রহমানের ছেলে ও খাজা রাশেদ বাবু লালমনিরহাট পৌরসভার সাহেপাড়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লালমনিরহাট জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় এই ঘটনা ঘটে। ওই ডাকবাংলোয় লালমনিরহাট ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক (ডিডি) ওমর ইবনে হাসান ভাড়া থাকে। সেখানে এনএসআইয়ের ভুয়া সহকারী পরিচালক আরিফুল ইসলাম সুজন (৩৩), স্থানীয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার খাজা রাশেদ বাবুসহ পাঁচ-ছয়জন দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হবে এবং তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে লালমনিরহাট ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. ওমর ইবনে হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় আমার কক্ষে এনএসআইয়ের সহকারী পরিচালক পরিচয় দিয়ে আরিফুল ইসলাম সুজন, সাংবাদিক পরিচয়ে খাজা রাশেদ বাবু ও র‌্যাবের পরিচয়ে পারভেজ ঢুকে আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তারা বলেন, জনৈক রুবেল হোসেনের কথা মতো দুই লাখ টাকা তাড়াতাড়ি দিয়ে দেন। আপনার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। যাতে আপনার শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতি না হয়, আমরা সে ব্যবস্থা করে দেবো। আমি তাদের কথায় রাজি না হলে আমাকে মারতে আসে। আমি তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করি। এরপরেই সদর থানার পুলিশ এসে সুজন ও রাশেদকে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় পারভেজ পালিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, গত ৬ মে লালমনিরহাট সদর থানায় রুবেল হোসেন, কাওসার হোসেন ও রিনা বেগম নামে তিনজনের নামে সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম। এখন এই ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় আমি বাদী হয়ে এজাহার করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।                           

লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মাহফুজ আলম জানান, আটক আরিফুল ইসলাম সুজনের নিকট থেকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সহকারী পরিচালক পদবি লেখা একটি ভুয়া পরিচয়পত্র ও স্থানীয় সাপ্তাহিক নতুন বাংলার সংবাদ পত্রিকার লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি পদবি লেখা একটি পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া খাজা রাশেদ বাবুর নিকট থেকে স্থানীয় ডেইলি নববিজয় অনলাইনের স্টাফ রিপোর্টার ও বিজ্ঞাপন ম্যানেজার লেখা একটি পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জানতে চাইলে লালমনিরহাটের উপপরিচালক (এনএসআই) আব্দুস ছাত্তার বলেন, পুলিশের হাতে আটক আরিফুল ইসলাম সুজন এনএসআইয়ের ভুয়া পরিচয়পত্র বহনকারী একজন ভুয়া সহকারী পরিচালক। এই নামে আমাদের কেউ নেই। বিষয়টি পুলিশকে নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভুয়া পরিচয়পত্র ইস্যু ও ব্যবহারের কারণে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
  
এই বিষয়ে জানতে ডেইলি নববিজয় অনলাইন এবং সাপ্তাহিক নতুন বাংলার সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আসাদুল ইসলাম সবুজের মোবাইলে সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন