মার্চের বেতন হয়েছে ২৪৩টি পোশাক কারখানায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ছয়টি শিল্পাঞ্চলে পোশাক খাতের মোট কারখানা আছে হাজার ৯৮৩টি। শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ২৪৩টি কারখানা মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে। বাকি হাজার ৭৪০টি কারখানায় বেতন পরিশোধ হয়নি। যদিও প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতি মাসের বেতন পরবর্তী মাসের তারিখের মধ্যে পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া এলাকায় বিজিএমইএ-বিকেএমইএর সদস্য পোশাক কারখানা আছে মোট ৫০৬টি। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত মোট ৩৪টি কারখানা বেতন পরিশোধ করেছে। গাজীপুরে বিজিএমইএ-বিকেএমইএর সদস্য পোশাক কারখানা আছে ৯৬৮টি। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে এমন কারখানার সংখ্যা ১১৬। চট্টগ্রামে বিজিএমইএ-বিকেএমইএর সদস্য পোশাক কারখানা আছে মোট ৪০৮টি। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে এমন কারখানার সংখ্যা ১৭।

নারায়ণগঞ্জ এলাকায় পোশাক কারখানা আছে হাজার ৪৬টি। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে ৫৩টি কারখানা। ময়মনসিংহে বিজিএমইএর সদস্য মোট পোশাক কারখানার সংখ্যা ৫০। এর মধ্যে ১৮টি কারখানা গতকাল পর্যন্ত বেতন পরিশোধ করেছে। অঞ্চলে বিকেএমইএর সদস্য কোনো কারখানা নেই। খুলনায় পোশাক কারখানা আছে পাঁচটি। কারখানাগুলোর সবই বিজিএমইএর সদস্য। সব কারখানাই মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে।

মার্চের বেতন পরিশোধ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি . রুবানা হক বলেন, চলতি মাসের ১৬ তারিখের মধ্যে সব বেতন পরিশোধ হয়ে যাবে।

দেশের ছয়টি শিল্প এলাকায় বস্ত্র, পোশাক, চামড়া, ওষুধ, রি-রোলিং, ফার্নিচার, মোবাইল সংযোজন, সিরামিকসহ সব খাত মিলিয়ে মোট শিল্প-কারখানা আছে হাজার ৬০২টি। এর মধ্যে গতকাল বন্ধ ছিল হাজার ৫৬টি। বাকি ৫৪৬টি কারখানা খোলা ছিল। আর হাজার ৬০২টি কারখানার মধ্যে গতকাল পর্যন্ত বেতন পরিশোধ করেছে হাজার ২৪টি। বাকি হাজার ৫৭৮টি কারখানায় বেতন পরিশোধ হয়নি। শিল্প এলাকাগুলোয় কর্মরত ৩০ লক্ষাধিক শ্রমিক।

জানা গেছে, কোভিড-১৯ বা নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের শুরুতেই দেশের পোশাক কারখানাগুলোর রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হতে শুরু করে। ক্রেতারা একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল করায় কারখানায় কাজের সংকটও তৈরি হয়। প্রেক্ষাপটে মার্চের বেতন পরিশোধে হিমশিম খেতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হচ্ছে ক্ষুদ্র আকারের কারখানাগুলোকে। ধরনের কারখানা ১০-১৫ শতাংশ।

পোশাক কারখানাগুলোর বেতন-ভাতা পরিশোধসংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর একটি চিঠিও দিয়েছে বিজিএমইএ। সংগঠনের সভাপতি রুবানা হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, আমাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে মার্চে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে, বাধাগ্রস্ত হয়েছে রফতানি।

চিঠিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে শ্রমিক-কর্মচারীদের মার্চের বেতন-ভাতা নির্বিঘ্নে পরিশোধ করতে পারে, সেজন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বেতন-ভাতা প্রদানের বিষয়ে নিয়মনীতি সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা আপনার দপ্তর থেকে দেয়া আবশ্যক। আপত্কালে ব্যাংকগুলো থেকে এমন সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অনুকূলে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন