গতি পেয়েছে রংপুর বিআরটিসি বাস সার্ভিস

আয় বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি রংপুর

রংপুরে বিআরটিসি বাস সার্ভিস নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। বন্ধ রুট চালু ও নতুন রুটে বাস চলাচল শুরু হওয়ায় বেড়েছে যাত্রী সংখ্যা। যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন ১৮টি বাস। এছাড়া এক যুগ আগে বন্ধ আটটি রুটে আবার বাস চলাচল শুরু করার কার্যক্রম চলছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যাত্রী বৃদ্ধিতে স্থানীয় ডিপোর আয়ও বেড়েছে অনেক। আগে প্রতিদিন আয় হতো ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, বর্তমানে তা প্রায় ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের বকেয়া কমে আসছে।

নিয়মিত বিআরটিসি বাসে যাতায়াতকারী একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি এ পরিবহন সংস্থার যাত্রীসেবা বেশ ভালো। বিশেষ করে পঞ্চগড় থেকে মোংলা বন্দর রুটটি চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা খুব উপকৃত হয়েছেন বলে জানান হাবিব আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ী।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) রংপুর বাস ডিপো সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিদিন বিআরটিসির মোট ৪০টি বাস চলাচল করছে। এসব বাস রংপুর-পঞ্চগড়, রংপুর-পিরোজপুর, ভুরুঙ্গামারী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম-লক্ষ্মীপাশা, কুড়িগ্রাম-গোপালগঞ্জ, পঞ্চগড়-মোংলা, বুড়িমারী স্থলবন্দর-বেনাপোল স্থলবন্দর, চিলমারী-দেবীগঞ্জ, টুনির হাট-গাইবান্ধা, রংপুর-শাকোয়া ও রংপুর-চিলাহাটিসহ ২২টি রুটে চলাচল করছে।

এদিকে চলতি বছর চালু হওয়া চারটি মধ্যে তিনটি রুট আগে বন্ধ ছিল। একটি রুট নতুন চালু করা হয়েছে। পুনরায় চালু রুটগুলো হচ্ছে, রংপুর-পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম-সাতক্ষীরার লক্ষ্মীপাশা এবং পঞ্চগড়-খুলনার মোংলা বন্দর। এছাড়া মাসখানেক আগে লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত নতুন রুটে বাস চালু হয়েছে। পাশাপাশি ১২ বছরের আগে বন্ধ হওয়া আটটি রুটে আবার বাস সার্ভিস চালুর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রংপুর-সুন্দরগঞ্জ, রংপুর চিলমারী, রংপুর-বুড়িমারী, রংপুর-কানসাট, পঞ্চগড়-দেবীগঞ্জ ও নীলফামারী-শঠিবাড়ী রুটে শিগগিরই বাস চলাচল শুরু হবে বলে জানা গেছে।

বিআরটিসি রংপুর বাস ডিপোর প্রধান কর্মকর্তা মো. গোলাম ফারুক বলেন, চলতি বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি নতুন রুটসহ মোট চারটি রুটে বাস সার্ভিস বাড়ানো হয়েছে।

এক যুগ আগে বন্ধ আটটি রুটের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০০৭-০৮ সালে ওই রুটগুলোয় নিয়মিত বাস চলত। কিন্তু পরে বন্ধ করে দেয়া হয়। রুটগুলো আবার চালুর প্রক্রিয়া চলছে।

এ কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, এ ডিপোয় লোকসান হওয়ার কোনো কারণ নেই। শুধু অব্যবস্থাপনার কারণেই ওইসব রুট বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি যোগ দেয়ার পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৭ মাসের বেতন বকেয়া ছিল প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এরই মধ্যে ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। প্রভিডেন্ট ফান্ডে দেয়া হয়েছে ১২ লাখ টাকা। এছাড়া দৈনিক আয় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে প্রায় ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে বলে জানান মো. গোলাম ফারুক।

রংপুর বাস ডিপোর অবকাঠামো সংকটের কারণে যাত্রীদের যথেষ্ট সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের পাশে বাস মেরামতের কাজ করতে হচ্ছে। এতে ঠিকমতো তদারকি করা যায় না। কয়েক বছর আগে রাস্তা পারাপারের সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ডিপোর দুজন কর্মীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এছাড়া অনুমোদিত জনবলের মাত্র ৪০ শতাংশ নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন