বাণিজ্যিক উৎপাদনে কনফিডেন্স সিমেন্টের বগুড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

কনফিডেন্স সিমেন্টের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংসের সাবসিডিয়ারি কনফিডেন্স পাওয়ার বগুড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। ১১৩ মেগাওয়াট সক্ষমতার এইচএফওভিত্তিক কেন্দ্রটিতে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে বিক্রি করা হবে। গত বছর কনফিডেন্স পাওয়ারের যে চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল তার মধ্যে বগুড়ার এই কেন্দ্রটিসহ সবগুলোই বর্তমানে বাণিজ্যিক উৎপাদনে রয়েছে।

গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কনফিডেন্স সিমেন্ট বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে, সম্প্রতি তাদের পর্ষদ কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংসের সাবসিডিয়ারি কনফিডেন্স বগুড়া লিমিটেডের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছে। কনফিডেন্স পাওয়ারের ৪১ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে কনফিডেন্স সিমেন্টের কাছে। আর কনফিডেন্স পাওয়ার বগুড়ার ৯৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংসের কাছে। বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের বীরগ্রামে অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে জার্মানির ম্যান ডিজেল ও টার্বো এসই ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া কেন্দ্রটিতে সাবস্টেশনের যন্ত্রপাতি চীন থেকে এবং টার্বাইন ও বয়লার ভারত থেকে আনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সিমেন্ট খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি কনফিডেন্স সিমেন্টের পর্ষদ গত বছরের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সভায় বগুড়ায় ১১৩ মেগাওয়াটের দুটি, রংপুরে ১১৩ মেগাওয়াটের একটি এবং চট্টগ্রামে ৫৪ দশমিক ৩৬৩ মেগাওয়াট সক্ষমতার একটিসহ মোট চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। কনফিডেন্স সিমেন্টের সহযোগী কোম্পানি কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংসের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র চারটির মোট উৎপাদন সক্ষমতা ৩৯৩ দশমিক ৩৬৩ মেগাওয়াট।  কনফিডেন্স সিমেন্টের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংসে মূল প্রতিষ্ঠানের ৪১ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। এইচএফওভিত্তিক চার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৫ বছরের জন্য বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করেছে বিপিডিবি। সম্প্রতি কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংসের ১১৩ মেগাওয়াট সক্ষমতার বগুড়া ইউনিট-২ ও রংপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ৫৪ দশমিক ৩৬৩ মেগাওয়াট সক্ষমতার চট্টগ্রামের বিদ্যুৎকেন্দ্র বাণিজ্যিক উৎপাদনে গেছে।

এদিকে, এ বছরের সেপ্টেম্বরে জোডিয়াক পাওয়ার চিটাগং লিমিটেডের ৫১ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়ার কথা জানায় কনফিডেন্স সিমেন্ট। ৫৪ দশমিক ৩৬৩ মেগাওয়াট সক্ষমতার এইচএফওভিত্তিক আইপিপি পাওয়ার প্লান্টটির ৫১ লাখ শেয়ার ১০ টাকা দরে কিনেছে কোম্পানিটি। এ বছরের ৬ আগস্ট থেকে শেয়ার কেনার বিষয়টি কার্যকর বলে গণ্য হবে। ৫১ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়ার সুবাদে জোডিয়াক পাওয়ার কনফিডেন্স সিমেন্টের সাবসিডিয়ারিতে পরিণত হয়েছে।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে কনফিডেন্স সিমেন্টের পর্ষদ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ টাকা ১ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫ টাকা ৬৭ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত) ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৭ টাকা ২৪ পয়সায়।

২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ ও ২০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে কনফিডেন্স সিমেন্ট। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির বার্ষিক ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৯৩ পয়সা এবং এনএভিপিএস ৭৬ টাকা। ২০১৭ হিসাব বছরেও ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার পেয়েছিলেন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা। সে হিসাব বছর পুনর্মূল্যায়িত ইপিএস ছিল ৯ টাকা ২৩ পয়সা। এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৮৪ টাকা ১০ পয়সা।

এদিকে চলতি ২০১৯-২০ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৫১ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৮১ পয়সা (এককভাবে) ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকা ৮২ পয়সা। 

ডিএসইতে সর্বশেষ গতকাল ১১০ টাকা ৭০ পয়সায় কনফিডেন্স সিমেন্টের শেয়ার লেনদেন হয়। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বনিম্ন দর ছিল ১০৯ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২০৮ টাকা।

১৯৯৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কনফিডেন্স সিমেন্টের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৬৪ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ২৭৯ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। মোট শেয়ার ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৯টি। এর মধ্যে ৩০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৪৪ দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ১৯ দশমিক ২২, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত প্রান্তিক মুনাফার ভিত্তিতে যা ১৮ দশমিক ৪৯।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন