ন্যূনতম স্যানিটেশন সুবিধা নেই। অনুপস্থিত প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা। পুষ্টির বিষয়টি প্রায় অচেনা। অপুষ্টি তাই নিত্যসঙ্গী চা শ্রমিকদের পরিবারে। এ নিয়ে তিন পর্বের ধারাবাহিক চা বাগানের জীবন শেষ পর্ব
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের ডালুছড়া চা বাগানের শ্রমিক সুমিতা কৈরি মা হন গত বছর। প্রশিক্ষিত ধাত্রী ছাড়াই নিজ বাড়িতেই প্রথম সন্তান জন্ম দেন তিনি। সিলেট শহরের পাশেই লাক্কাতুরা চা বাগানে শ্রমিক লক্ষ্মী গোয়ালা মাস দুয়েক আগে বাড়িতে সন্তান জন্ম দেন। প্রসবকালে প্রশিক্ষিত কোনো ধাত্রীর সহযোগিতা নেননি তিনিও।
সুমিতা কৈরির ভাষ্য, আমাদের পরিবারের সব নারীর বাড়িতে প্রসব হয়েছে। হাসপাতালে যাওয়া বাড়ির বয়স্করা পছন্দ করেন না। হাসপাতালে গেলে বা ধাত্রী ডেকে আনলে প্রসবকালীন ঝামেলা আরো বাড়ে।
লক্ষ্মী গোয়ালা অবশ্য বলেন অর্থ সংকটের কথা। তিনি বলেন, ডাক্তারের কাছে গেলে তো টাকা দিতে হয়। ধাত্রী আনতেও টাকা দিতে হয়। টাকা পাব কোথায়?
সুমিতা ও লক্ষ্মী গোয়ালা চাইলেই প্রশিক্ষিত ধাত্রী বা মিডওয়াইফের সেবা নিতে পারতেন। কিন্তু সে সুযোগটিও ছিল না বড়লেখার কেরামতনগর চা বাগানের শ্রমিক আয়েশা, সুদীপা ও অরুণার। তাদের বাগানে নেই প্রশিক্ষিত ধাত্রী বা মিডওয়াইফ। ফলে বাড়িতে প্রবীণ নারীদের সহযোগিতায় সন্তান প্রসব করেন তারা।
চা বাগানের প্রায় প্রতিটি ঘরে গেলেই শোনা যাবে এমন ঘটনা। বাগানের বেশির ভাগ নারীরই সন্তান প্রসব হয় নিজ বাড়িতে চিকিৎসক, মিডওয়াইফ বা প্রশিক্ষিত কোনো ধাত্রীর সহযোগিতা ছাড়াই।
চা শ্রমিকদের নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, সিলেটের তিন জেলার চা বাগানগুলোর প্রসূতিদের ১৬ শতাংশ সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। বাকি ৮০ শতাংশের বেশি নারী বাড়িতেই সন্তান জন্ম দেন। যদিও জাতীয়ভাবে ৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ প্রসূতি সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্ম দেন। তবে সিলেট বিভাগে এ হার ৪০ দশমিক ২ শতাংশ। এ বিভাগের চা বাগানগুলোয় তা আরো কম।
সিলেট বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) দপ্তরের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, বেশির ভাগ চা বাগানেই প্রশিক্ষিত ধাত্রী বা মিডওয়াইফ নেই। এলাকার বয়স্ক নারীরাই এ কাজ করে থাকেন। ফলে চা বাগানগুলোতে মাতৃ ও নবজাতক মৃত্যুর হারও বেশি। চা বাগানের এক হাজার নবজাতকের মধ্যে ৫৫টি জন্মের সময়ই মারা যায়। সিলেট বিভাগে এ সংখ্যা ২৮।
তবে বাড়িতেই