আন্তর্জাতিক হিসাবমান অনুসারে আর্থিক বিবরণী তৈরি না করার পাশাপাশি যথাযথভাবে রাইট ইস্যু তহবিলের অর্থ ব্যবহারে ব্যর্থতার কারণে বস্ত্র খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস লিমিটেডের প্রত্যেক পরিচালককে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে স্বতন্ত্র পরিচালক জরিমানার আওতার বাইরে থাকবেন। গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৭০৩তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ কাশেম অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস লিমিটেডের ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ ও ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত হিসাব বছরের বার্ষিক বিবরণী এবং রাইট ইস্যু তহবিল ব্যবহারের বিষয়ে বিশেষ নিরীক্ষার জন্য বিশেষ নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। বিশেষ নিরীক্ষকের প্রতিবেদন অনুসারে জেনারেশন নেক্সট বেশকিছু সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৪ ও ২০১৫ হিসাব বছরের বার্ষিক বিবরণী আন্তর্জাতিক হিসাবমান অনুসারে পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি করতে ব্যর্থতার মাধ্যমে দ্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭-এর রুল ১২(২)-এর লঙ্ঘন। এছাড়া যথাযথভাবে রাইট শেয়ার ইস্যু তহবিল ব্যবহারে ব্যর্থ হওয়ার মাধ্যমে রাইট শেয়ার অফার ডকুমেন্ট (আরওডি)-এর ৮(ক) অনুচ্ছেদের বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত সিডিউল এবং আরওডির ১৪ ও ১৮ নং শর্ত লঙ্ঘন হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে তিন বছরের বেশি অডিট ফার্ম হিসেবে আতা খান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে দিয়ে নিরীক্ষা করনোর মাধ্যমে কমিশনের সংশ্লিষ্ট আদেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রধান এবং স্বতন্ত্র পরিচালক যথাযথ নিয়মে নিয়োগ না দেয়ার মাধ্যমে কমিশনের করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইনের শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
আলোচ্য সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধান লঙ্ঘনের কারণে জেনারেশন নেক্সটের স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতীত প্রত্যেক পরিচালককে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
তাছাড়া আতা খান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস বিধিবদ্ধ নিরীক্ষক হিসেবে জেনারেশন নেক্সটের আর্থিক বিবরণী বিধিবহির্ভূতভাবে তিন বছরের বেশি নিরীক্ষা করায় এবং নিরীক্ষক কর্তৃক কোম্পানির আলোচ্য সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধান লঙ্ঘনের বিষয়গুলো নিরীক্ষকের মন্তব্যে অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ কারণে আতা খান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) কাছে পাঠানোর পাশাপাশি নিরীক্ষা ফার্মটিকে বিএসইসির নিরীক্ষক প্যানেল থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ ও ২০১৫ হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতকালীন জেনারেশন নেক্সটের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী। পরিচালক ছিলেন মো. আখতার, জাবেদ অপগেনহফেন ও রাজীব শেঠি। এছাড়া ২০১৪ হিসাব বছরে জেনারেশন নেক্সটের পর্ষদে নিউ ইংল্যান্ড ইকুইটি লিমিটেডের মনোনীত পরিচালক ছিলেন মার্ক নিরঞ্জন চৌধুরী। আর ২০১৫ হিসাব বছরে কোম্পানিটির পর্ষদে এজে করপোরেশন লিমিটেডের মনোনীত পরিচালক ছিলেন কাজী রেফায়েত রহমান।
