গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। গতকাল ইউজিসির পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনটি কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেয়। পরে সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
এদিকে গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন উপাচার্য।
তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করার বিষয়টি বণিক বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির একজন সদস্য বলেন, কমিটি গঠনের পর আমরা গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাই। সেখানে গিয়ে উপাচার্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের কথা বলেছি। নিরপেক্ষতা বজায় রেখেই পুরো তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ঢাকায় ফিরে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয়েছে।
বেশ কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসিকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক তথ্য জানাতে অনুরোধ করে। এর পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর ইউজিসির সদস্য মুহাম্মদ আলমগীরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর কমিটি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শনে যায়। দুদিন সরেজমিন পর্যবেক্ষণ শেষে রোববার এ প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ইউজিসির সদস্য দিল আফরোজা বেগম, ইউজিসির সদস্য সাজ্জাদ হুসেন, ইউজিসির পরিচালক কামাল হোসেন ও উপপরিচালক মৌলি আজাদ (সদস্য সচিব)।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খোন্দকার নাসিরউদ্দিন ২০১৫ সালে বশেমুরবিপ্রবির দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ কোটা প্রবর্তন, ভর্তি পরীক্ষা বাবদ আয়কৃত অর্থের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যয়, শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের নামে অর্থ আত্মসাত্ ও তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শোকজ করাসহ নানা আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া স্ট্যাটাস ও ব্যক্তিগত আলাপকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে বহিষ্কার করে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে ওই ছাত্রীকে ফোন দিয়ে হুমকি দিয়েছিলেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। হুমকি দেয়া কথোপথনের অডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লেও এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন হয়েছে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও। পরে ওই ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিলেও ভিসি পদত্যাগের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এ আন্দোলন এখনো চলমান।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবেদন আজ পাঠানোর কথা। এখনো হাতে পাইনি। মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই ইউজিসি তদন্ত কার্যক্রমটি পরিচালনা করে। এ?