শহীদি মার্চে মানুষের ঢল, পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজিত শহীদি মার্চ গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

হাজারো ছাত্র-জনতার সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘শহীদি মার্চ’ পদযাত্রা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির এক মাস পূর্তিতে আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সারা দেশে এ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচি থেকে পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেছে শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে গতকাল বিকালে শুরু হয় ছাত্র-জনতার ‘শহীদি মার্চ’ পদযাত্রা। পদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি, মাদ্রাসা ও স্কুলের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে নীলক্ষেত, সায়েন্স ল্যাব, কলাবাগান, সংসদ ভবন, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, রাজু ভাস্কর্য হয়ে শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার শহীদি মার্চ কর্মসূচির পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা, শহীদ পরিবারকে আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে দেয়া, প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসরদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনা, গণভবনকে জুলাই স্মৃতি জাদুঘর ঘোষণা করা এবং রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গতকাল বেলা ২টায় দেখা যায়, শহীদি মার্চ কর্মসূচিতে অংশ নিতে দলে দলে হাজারো ছাত্র-জনতা জড়ো হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ মার্চে অংশ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আসছে। তাদের বেশির ভাগের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও কপালে জাতীয় পতাকার ব্যান্ড বাঁধা দেখা গেছে। বেলা আড়াইটার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিয়ে ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করে।

শহীদি মার্চে শিক্ষার্থীরা ‘সফল হোক সফল হোক, শহীদি মার্চ সফল হোক’, ‘শহীদদের কারণে, ভয় করি না মরণে’, ‘আবু সাঈদের/শহীদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গত জুলাইয়ের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগসহ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হামলা-নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এর তিনদিন পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন