নৃশংসতার ঘটনা তদন্তে আজ ঢাকায় আসছে জাতিসংঘের কারিগরি দল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে গত জুলাই ও আগস্টের শুরুতে দেশজুড়ে সংঘটিত নৃশংসতার ঘটনাগুলো তদন্তের জন্য জাতিসংঘের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল আজ ঢাকায় আসছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র গতকাল বণিক বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, জাতিসংঘের জেনেভা মিশন থেকে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি আজ ঢাকায় পৌঁছবে। এ দলের সদস্যরা তদন্তসংক্রান্ত প্রাথমিক মূল্যায়নের লক্ষ্যে সপ্তাহখানেক বাংলাদেশে অবস্থান করতে পারেন। তাদের সফরের পর ঢাকায় আসবে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর এই প্রথম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ।

কোটা সংস্কার আন্দোলন, শেখ হাসিনার সরকার পতন এবং তার পরবর্তী সময়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ এ পদক্ষেপ নিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ১৪ আগস্ট ফোনালাপের সময় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক সংহতি প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে এ ক্রান্তিলগ্নে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেয়ার কথাও বলেন। 

এর মধ্যে গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। তিনি জানান, সহিংসতার ঘটনা তদন্তে তাদের কিছু টেকনিক্যাল সহকর্মী ঢাকায় আসবেন।

সংঘাতপূর্ণ এলাকায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কাজ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘ সনদে নিরাপত্তা পরিষদকে তদন্ত ও মধ্যস্থতা, মিশন প্রেরণ, বিশেষ দূত নিয়োগ বা মহাসচিবকে তার অফিস ব্যবহারের অনুরোধ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গতকাল সন্ধ্যায় নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সম্ভবত জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল ঢাকা আসবে। এর নেতৃত্ব দেবেন রুরি ম্যানগোভেন। তিনি সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক এবং এশিয়া-প্যাসিফিক সেকশনের প্রধান। ওনার সঙ্গে আরো দুজন মানবাধিকার অফিসার থাকবেন। তাদের ২৮ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকার কথা আছে। কিন্তু তারা এর বেশি সময়ও থাকতে পারেন।’ বাংলাদেশকে কীভাবে সহায়তা করা যায়, যে তদন্ত শুরু হতে যাচ্ছে, সেটির বিষয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রতিনিধি দলকে যথাযথ সহযোগিতা দেবে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘উপদেষ্টা, সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা দেখা করবেন। তবে তারা জানাননি যে তাদের পদক্ষেপগুলো কী হবে। আমরা আশা করতে পারি, প্রথম দল হিসেবে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গেই আলোচনা করবে। কোন কোন জায়গায় কী সহায়তা লাগবে এবং এরপর যে দলটি আসবে, তাদের কর্মপরিধি কী হতে পারে, তা নিয়েও উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রাথমিক দলের সদস্যরা।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন