বিদ্যুতের ব্যবহার হ্রাস

মহাকাশে ডাটা সেন্টার পাঠানোর কথা ভাবছে ইউরোপ

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২৬ সালের মধ্যে বিশ্বে সামগ্রিকভাবে ডাটা সেন্টার খাতে বিদ্যুতের ব্যবহার প্রতি ঘণ্টায় ১ হাজার টেরাওয়াট ছাড়াবে ছবি: সিএনবিসি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। আর এসব কার্যক্রম পরিচালনা তথ্য সংগ্রহের জন্য ডাটা সেন্টার নির্মাণও বাড়ছে, যা বিদ্যুৎ ব্যবহারের ওপরও চাপ তৈরি করছে। সমস্যার সমাধানে মহাকাশে ডিজিটাল স্টোরেজ তৈরির কথা ভাবছে ইউরোপ। খবর সিএনবিসি।

অ্যাডভান্সড স্পেস ক্লাউড ফর ইউরোপিয়ান নেট জিরো এমিশন অ্যান্ড ডাটা সভরেনটি শীর্ষক স্টাডিটি গত ১৬ মাস ধরে করা হয়েছে। স্টাডিটির পরিচালক ড্যামিয়েন ডুমেস্টিয়ার বলেন, পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ডাটা সেন্টার তৈরির সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ফলাফল বেশ আশাব্যঞ্জক।

ইউরোপিয়ান কমিশনের অধীনে ২০ লাখ ইউরো (২১ লাখ ডলার) ব্যয়ে অ্যাসসেন্ড স্টাডি পরিচালনা করেছে থালেস অ্যালেনিয়া। সেখানে দাবি করা হয়, মহাকাশনির্ভর ডাটা সেন্টার তৈরি প্রযুক্তি, অর্থনৈতিক পরিবেশগতভাবে সম্ভব। ডুমেস্টিয়ার সিএনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড্যামিয়েন ডুমেস্টিয়ার বলেন, সৌর শক্তি ব্যবহার করে কিছু ডাটা সেন্টার মহাকাশে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে ভূপৃষ্ঠে থাকা ডাটা সেন্টারগুলোর বিদ্যুতের কিছুটা চাহিদা অনেকটা কমে আসবে।

ডিজিটালাইজেশনের অগ্রগতির সঙ্গে টিকে থাকার জন্য ডাটা সেন্টার প্রয়োজন। তবে এর সঙ্গে ডাটা সেন্টার পরিচালনায় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে প্রচুর বিদ্যুৎ পানির প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০২৬ সাল নাগাদ বিশ্বে সামগ্রিকভাবে ডাটা সেন্টার খাতে বিদ্যুতের ব্যবহার প্রতি ঘণ্টায় হাজার টেরাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে।

ড্যানিশ ডাটা সেন্টার ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের স্ট্র্যাটেজি এবং অপারেশনের প্রধান মেরিমা জানিক বলেন, ‘ খাতে প্রচুর তথ্য সংরক্ষণের প্রয়োজন হবে। চাহিদা সুনামির সঙ্গে তুলনীয়।

তিনি আরো বলেন, ‘সাধারণের তুলনায় এআই ডাটা সেন্টারে তিন গুণ বেশি বিদ্যুৎ প্রয়োজন। তবে এর ব্যয় বা ব্যবহারের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। কারণে বর্তমানে ডাটা সেন্টার কীভাবে তৈরি করা হবে এবং এর কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ভিন্ন পন্থা গ্রহণ করতে হবে।

গবেষণার তথ্যানুযায়ী, ভূপৃষ্ঠ থেকে হাজার ৪০০ কিলোমিটার উঁচুতে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ডাটা সেন্টার স্থাপন করতে হবে, যা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের তুলনায় তিন গুণে বেশি দূরে। ডুমেস্টিয়ার জানান, অ্যাসসেন্ড ক্লাউড পরিষেবা বাণিজ্যিকীকরণের অংশ হিসেবে ২০৩৬ সালে মোট ১০ মেগাওয়াট সক্ষমতার ১৩টি স্পেস ডাটা সেন্টার বিল্ডিং ব্লক স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

প্রতিটি ব্লক হাজার ৩০০ বর্গমিটার অঞ্চল জুড়ে থাকবে। এতে নিজস্ব ডাটা সেন্টার সার্ভিস থাকবে এবং স্পেস যানের মাধ্যমে এগুলো চালু করা হবে।

ডুমেস্টিয়ারের মতে, ডিজিটাল খাতে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে ২০৫০ সাল নাগাদ হাজার ৩০০-এর বেশি বিল্ডিং ব্লক চালু করতে হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে ইউরোপ শূন্য কার্বন নিঃসরণের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এর সম্ভাব্য পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে জানাই ছিল অ্যাসসেন্ড স্টাডির লক্ষ্য। এতে দেখা গেছে, কার্বন ডাই-অক্সাইডের নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে, একটি নতুন ধরনের লঞ্চার তৈরি করতে হবে।

স্টাডিতে অংশে নেয়া ১২ কোম্পানির মধ্যে আরিয়ান গ্রুপ দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিবেশবান্ধব ধরনের লঞ্চার তৈরিতে কাজ করছে বলে জানিয়েছে। কোম্পানির লক্ষ্য ২০৩৫ সাল নাগাদ প্রথম লঞ্চারটি তৈরি করা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন