বৈশ্বিক অভিঘাত মোকাবেলায় যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে এসএমই খাত

ছবি : বণিক বার্তা

শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতকে আরো এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে ২৭ জুনকে ‘এমএসএমই দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ। এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো দিবসটি পালিত হচ্ছে।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন হবে। এরপর মধ্যম আয়ের দেশের স্বপ্নযাত্রা শুরু হবে। এ অগ্রযাত্রায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ‘এমএসএমই ডে ২০২৪’ উপলক্ষে বণিক বার্তা বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

প্রথমে করোনা মহামারী, তারপর ইউক্রেন যুদ্ধ ও সর্বশেষ মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতায় পুরো বিশ্ব অর্থনীতিই টালমাটাল। করোনার সময় অনেক বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সক্রিয় থেকে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছিল লাখো ক্ষুদ্র উদ্যোগ। যেকোনো বৈশ্বিক অভিঘাত মোকাবেলা করে টিকে থাকার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে এসএমই খাত। আমাদের দেশীয় বাজার অনেক বড় হওয়ায় যেকোনো ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ বিকাশের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। মনে রাখতে হবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সুষম ও সমন্বিত উন্নয়ন এসএমইর প্রধান কারিগর। এ শিল্পের চাকা সচল রেখে জাতীয় অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সরকার সবসময়ই আন্তরিক। এসএমই উদ্যোক্তারা শতভাগ সততার সঙ্গে কাজ করছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রেও তারা এগিয়ে। প্রয়োজনীয় অর্থায়ন সুবিধা নিশ্চিত করা হলে দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাত আরো শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবে।

ব্যাংকগুলোকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের পারফরম্যান্স বিবেচনা করে ঋণ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। চিত্তাকর্ষক ডিজাইনের পাশাপাশি গুণগতমান ও মূল্যের বিচারে সাশ্রয়ী হওয়ায় বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের এসএমই পণ্য বিশ্ববাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা বেশি। জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের ব্যবসায় উদ্যোগের শতকরা ৯০ ভাগ, কর্মসংস্থানের ৬০-৭০ ভাগ এবং জিডিপিতে ৫০ ভাগ অবদান এমএসএমই খাতের। বিশ্বজুড়ে কর্মক্ষম দরিদ্র, নারী, যুবক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়নের মেরুদণ্ড হিসেবে ভূমিকা রাখছে এমএসএমই খাত।

এমএসএমই খাতকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার দেশের প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় যেসব সম্ভাবনাময় শিল্প রয়েছে, সেসব শিল্প পণ্যের বাজার তৈরিতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। জিআই পণ্যগুলোর সঙ্গে অসংখ্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা জড়িত। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সম্মানজনক অবস্থান তৈরি ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে জিআই পণ্য। যেকোনো ক্ষুদ্র উদ্যোগের সঙ্গেই নারীরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এজন্য এসএমইর বিকাশ মানেই নারী শক্তির বিকাশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন