চাল, ডাল, পেঁয়াজ, তেলসহ নানা ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য
নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বার আউলিয়া নামে একটি জাহাজ। শুক্রবার
(১৪ জুন) দুপুর ২টায় কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজটি যাত্রা
করে। জাহাজটিতে করে কিছু সংখ্যক যাত্রীও গেছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান,
দ্বীপের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে জাহাজটি পাঠানো হয়েছে। এটি বঙ্গোপসাগর দিয়ে টেকনাফ
পৌঁছে ঘোলারচর হয়ে সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে। পণ্য সামগ্রীর পাশাপাশি কক্সবাজারে আটকা পড়া
সেন্টমার্টিনের ২ শতাধিক বাসিন্দাও এ জাহাজে করে ফিরছেন।
সকাল ১০টায় বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এমভি বার আউলিয়া জাহাজে
তোলা হচ্ছে চাল, ডাল, পেঁয়াজসহ নানা ধরনের ভোগ্যপণ্য। একই সঙ্গে কক্সবাজারের বিভিন্ন
জায়গায় আটকে পড়া সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারাও জড়ো হচ্ছেন নিজ এলাকায় ফেরার জন্য।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, চাল, ডাল, তেল,
লবণ, কাঁচা শাক-সবজি সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে অনেক আগে। আজ এসব খাদ্যপণ্য নিয়ে যাচ্ছি।
জাহাজটির কক্সবাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান,
মিয়ানমার সীমান্ত থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়াতকারী নৌযান লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের
কারণে নৌযান বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্যপণ্য সংকট হচ্ছে। গত বুধবার (১২ জুন) প্রশাসনের
সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে জাহাজটি পণ্য নিয়ে দ্বীপে যাচ্ছে। এটি প্রশাসন যতদিন চলাচল
করতে বলবেন ততদিন যাত্রা করবে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন,
এক সপ্তাহ সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে
দ্বীপটিতে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। অবশেষে জেলা প্রশাসনের
সহযোগিতায় কক্সবাজার থেকে খাদ্যপণ্য নিয়ে জাহাজ আসছে। একই সঙ্গে কক্সবাজারে আটকা পড়া
বাসিন্দারাও ফিরছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান,
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুর ১টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটি ঘাট থেকে ৪টি
ট্রলারযোগে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যদের নিরাপত্তায় অন্তত আড়াই শতাধিক মানুষ টেকনাফের
উদ্দেশে যাত্রা করেন। বিকাল ৩টার দিকে ট্রলারগুলো টেকনাফের মুন্ডারডেইল সাগর উপকূলে
পৌঁছে। কিন্তু সাগরের প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে এসব ট্রলার থেকে লোকজনকে সরাসরি কূলে
ওঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। পরে কয়েকটি ডিঙি নৌকা করে তাদের কূলে আনা হয়।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের নাফ
নদীর নাইক্ষ্যংদীয়া পয়েন্টে বাংলাদেশী ট্রলারকে লক্ষ করে মিয়ানমারের ওদিক থেকে কয়েক
দফা গুলি ছোঁড়া হয়। এ ঘটনায় গত এক সপ্তাহ ধরে ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দ্বীপটিতে
খাদ্য সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় আজ থেকে কক্সবাজার থেকে বিকল্প পথে জাহাজ চলাচল শুরু
করা হয়।