পণ্যবাজার

রাশিয়ার গম উৎপাদন পূর্বাভাস কমিয়েছে দেশটির কৃষি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান আইকেএআর। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড গ্রেইন ডট কম।

এর আগে চলতি অর্থবছর রাশিয়ার গম উৎপাদন ৯ কোটি ১০ লাখ টন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল আইকেএআর। কিন্তু সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে তা কমিয়ে উৎপাদনের পরিমাণ ৮ কোটি ৬০ লাখ টনে নেমে যাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে আনুমানিক ৯ কোটি ১৫ লাখ টন গম উৎপাদন করেছিল রাশিয়া। এর মধ্যে রফতানিযোগ্য উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ১০ লাখ টন।

রাশিয়ায় গম উৎপাদন কমে যাওয়ায় রফতানিতেও এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে। চলতি বছর গম রফতানির পরিমাণ ৫ কোটি ৫ লাখ থেকে ৪ কোটি ৭০ লাখ টনে নেমে যাওয়ার পূর্বাভাসও দিয়েছে আইকেএআর।

বিশ্বব্যাপী গম রফতানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাশিয়া। বিশেষ করে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশির ভাগ দেশেই রাশিয়া গম সরবরাহ করে। এছাড়া দেশটি বিশ্বব্যাপী গম রফতানির প্রায় ২০ শতাংশ সরবরাহ করে।

রাশিয়া বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ গম উৎপাদনকারী দেশ। গম উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও কৃষিপণ্যটি রফতানিতে একক আধিপত্য ধরে রেখেছে রাশিয়া। এ খাতে দেশটির ধারেকাছেও নেই অন্য কেউ। ফলে রফতানি বাজারে রুশ আধিপত্য আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে গমের দাম নির্ধারণে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। 

প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা কারণে রাশিয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হলে কিংবা যেকোনো কারণে দেশটি থেকে রফতানি বাড়লে বা কমলে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দামে উত্থান-পতন দেখা যায়। এ পরিস্থিতি বৈশ্বিক কৃষিপণ্যের বাজারে রাশিয়াকে শক্তিশালী ফ্যাক্টর হিসেবে ভূমিকা রাখতেও উৎসাহিত করে।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদন হতো। ওই সময় গমের রফতানি বাজারেও সোভিয়েতের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় ছিল। 

তবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর গম উৎপাদন ও রফতানিতে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে রাশিয়া। উত্থান ঘটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর। এক পর্যায়ে গম রফতানি খাতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর কাছে শীর্ষ অবস্থান হারায় রাশিয়া। তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশটি। নতুন করে গমের শীর্ষ রফতানিকারক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে তারা। এমনকি ২০২২ সালে রাশিয়ায় ১০ কোটি ৫০ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল, যা ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ।