অবৈধ সম্পদ গোপন করতে ছেলের নামে জমি কিনেছেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সাবেক কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম (সাগর)। তিনি ১ হাজার ৪৩৭ দশমিক ২৮ শতাংশ জমি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় কিনেছিলেন। ২০১৩-১৭ সালের মধ্যে এসব জমি কেনা হয়। তখন তাদের ছেলে সালেহ মুহতাসিন নাহিয়ান (জিসান) নাবালক ছিল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগপত্র সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে প্রায় ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের নামে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
দুদক জানায়, নিকলী সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত ২৪টি দলিলের সার্টিফায়েড কপি পর্যালোচনায় দেখা যায়, শফিকুল ইসলাম ছেলের নামে ১ কোটি ৯০ লাখ ৮৪ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। কিন্তু তিনি দুদকে ২০১৮ সালের ২৮ জুন দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে এসব সম্পদের তথ্য গোপন করেন, যা শফিকুল ইসলামের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ।
নামে-বেনামে প্রায় ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে দুটি পৃথক মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে তাদের নামে দুটি অভিযোগও আদালতে দাখিল করা হয়। পরে দুদকের কাছে গোয়েন্দা প্রতিবেদন আসে, তাদের আরো সম্পদ রয়েছে, যা অভিযোগপত্রে আসেনি। তারপর যাচাইকালে তাদের ছেলে সালেহ মুহতাসিন নাহিয়ানের (জিসান) নামে ২৪টি দলিলের মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৭১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন ও ১ কোটি ১৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে ২০২১ সালের ২২ মার্চ একটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তার স্ত্রী মাহবুবা ইসলামের বিরুদ্ধে ৯৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন ও ৪ কোটি ৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ পৃথক একটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তবে এ দুটি অভিযোগপত্রে তাদের ছেলের নামে কেনা ১ কোটি ৯০ লাখ ৮৪ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাই পুনরায় সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
দুদক জানায়, বাবা এসব সম্পদের মালিক হওয়ায় সম্পূরক অভিযোগপত্রে ছেলে সালেহ মুহতাসিন নাহিয়ানকে (জিসান) আসামি করা হয়নি। গত ১৪ ডিসেম্বর দুদকের উপপরিচালক নূর-ই-আলম আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্রটি দাখিল করেছেন।