কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল

টেকসই নগরায়ণ ও পরিবেশ সুরক্ষায় ১০ সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

টেকসই নগরায়ণ ও পরিবেশের সুরক্ষায় ১০টি সুপারিশ প্রস্তাব করেছে ইউএসএইডের সহযোগী সংগঠন কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল। সংগঠনটি তাদের প্রমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস (পিএআর) কর্মসূচির আওতায় ২০২৪ সালের নির্বাচন-পূর্ববর্তী সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২৬৩ নেতা থেকে বিভিন্ন মৌখিক ও লিখিত প্রতিশ্রুতি নিয়েছে। যাদের মধ্য থেকে পরে ৪৬ জন সংসদ সদস্য হয়েছেন। এসব প্রতিশ্রুতির ওপর ভিত্তি করে নগরায়ণ ও পরিবেশ সুরক্ষায় ১০টি সুপারিশ প্রস্তাব করেছে কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল।

গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় দুই ভাগে পাঁচটি করে মোট ১০টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশের শহরগুলোয় বর্ধনশীল নগরায়ণের ফলে বিদ্যমান অবকাঠামোতে অধিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যকর পয়োনিষ্কাশন এবং আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই স্মার্ট ও টেকসই নগরায়ণ ও সেবা সরবরাহ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করার দাবি জানিয়ে পাঁচটি সুপারিশ প্রস্তাব করা হয়। সুপারিশগুলো হলো—জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিসহ বিদ্যমান কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা বাস্তবায়ন করা, একবার-ব্যবহার্য প্লাস্টিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা এবং প্লাস্টিকের কাঁচামাল আমদানি সীমিত করা, বিদ্যমান তিন ‘আর’ (রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল) নীতিমালা পর্যালোচনা করে নতুন প্রস্তাবিত চার ‘আর’ (রিডিউস, রিইউজ, রিকভারি ও রিসাইকেল) নীতিমালার বাস্তবায়ন করা, জাতীয় পর্যায়ে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল মনিটরিং ও নজরদারির ব্যবস্থা করা এবং পরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য বাংলাদেশের সব সিটি করপোরেশনে মাল্টি-স্টেকহোল্ডার ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের মাধ্যমে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ পানি এবং পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করতে মনিটরিং ফ্রেমওয়ার্ক পদ্ধতি প্রবর্তন ও বাস্তবায়ন করা।

পানি দূষণ কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়ে প্রস্তাবিত পাঁচটি সুপারিশ হলো—নিয়মিতভাবে মাল্টি-সেক্টরাল সভায় নদী এবং পরিবেশ দূষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও পদক্ষেপের অগ্রগতি আলোচনা করা, জাতীয় পর্যায়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে নদী ও পরিবেশ দূষণ বন্ধ ও প্রতিরোধে উৎসাহিত করার জন্য প্রণোদনা প্রদানের নীতিমালা প্রণয়ন করা, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কল-কারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব অনুশীলনের উপায়গুলো চিহ্নিত ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা, নদী দূষণ প্রতিরোধে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তদারকি ক্ষমতার পরিধি বৃদ্ধি করা এবং নতুন সরকারি অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক প্রকল্প অনুমোদনের আগে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পরিবেশগত দিক মূল্যায়ন করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সরকার এককভাবে কিছু করতে পারবে না, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। পাঠ্যক্রমে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়াবলি যুক্ত করে ছোট থেকেই শিশুদের সচেতন করার তাগিদ হিসেবেই মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।’

আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ইউএসএইডের বাংলাদেশ অফিসের ইকোনমিক গ্রোথ ডিরেক্টর মোহাম্মদ খান, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের ভাইস প্রেসিডেন্ট অব প্রোগ্রামস গোয়েনডোলিন অ্যাপেল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল পিএআর কর্মসূচির চিফ অব পার্টি কেটি ক্রোক, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক প্রদীপ কুমার রায়, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরিফ জামিল এবং সুশীলনের প্রধান নির্বাহী মোস্তফা নুরুজ্জামান প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন