শত মানুষের দ্বীপে ৬০০ ছাগল নিয়ে বিপত্তি!

বণিক বার্তা অনলাইন

ছবি: ইয়াহু নিউজ

আদর্শ বাস্তুসংস্থান বিবেচনায় নিলে কোনো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে খাদ্য শৃঙ্খলে সুষম বিন্যাস থাকবে। যেখানে কোনো প্রাণীর বৃদ্ধি অন্যদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে না। বাস্তবে এমন ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে উদাহরণ পাওয়া একটু জটিল। তবে উল্টোটা পাওয়া ততটা কঠিন নয়। নইলে সিসিলির প্রত্যন্ত এক দ্বীপের মানুষেরা এত বিপত্তিতে পড়তেন না।

স্কাই নিউজের খবর অনুযায়ী, সিসিলির উপকূলের ৫ বর্গ কিলোমিটারের ছোট দ্বীপ অ্যাকুডি, জনসংখ্যা মাত্র ১০০ জন। কিন্তু সেখানে স্বাধীনভাবে চড়ে বেড়ানো ছাগলের সংখ্যা ৬০০ এর মতো। তাই ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা তৈরিতে দ্বীপবাসী ছাগলগুলো দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

স্থানীয় মেয়র রিকার্ডোর গুল্লোর দেয়া তথ্যানুযায়ী, এ চারপেয়েগুলো একদমই শান্তশিষ্ট নয়। বরং সারাক্ষণ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরিতে তাদের জুড়ি নেই। পরিবেশের ওপর যথেষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি অবাধে ঢুকে পড়ছে বাড়িঘরে। সেখানে তাণ্ডব চালিয়ে থেমে নেই, খেয়ে যাচ্ছে খেত ফসল।

পরিস্থিতি সবসময় এমন ছিল, তাও অবশ্য নয়। রিকার্ডো জানান, কিছু ছাগল তাদের মালিকের খোয়াড় থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর অনর্থ শুরু হয়। প্রাণীগুলো উন্মুক্ত পরিবেশে একদম বন্য হয়ে উঠে। একইসঙ্গে শাবকের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। এখন তাদের নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

রিকার্ডো বলেন, ‘ছোট এ দ্বীপে এরই মধ্যে ৬০০ ছাগল গণনা করা হয়েছে। ভূমির তুলনায় এ সংখ্যা সত্যিই বেশি। আকুডির যেখানেই যাবেন সর্বত্র তাদের দেখা মিলবে।’

ছাগলগুলো দেখতে সুন্দর হলেও এদের আচার-ব্যবহার একদমই সুবিধার নয়। মানুষজনও তাদের ভয় করে। ভয়ে থাকে, কখন আবার বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে।

দক্ষিণ ইতালির আগ্নেয়গিরিময় এওলিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে ছোট দ্বীপ আকুডি। এরই মধ্যে ছাগলের অত্যাচারে ব্যাপক ক্ষতি দেখছে দ্বীপটির জনগণ। এবার বিষয়টিতে সরকারের মনোযোগ দেয়া উচিত বলে মনে করেন মেয়র।

অবশ্য ভালো একটি প্রস্তাবও পেয়েছেন তারা। টাস্কানি ও লম্বার্ডি অঞ্চল থেকে ছাগলের জন্য অনুরোধ এসেছে। ইতালির ওই অঞ্চলগুলো প্রজননের মাধ্যমে ছাগল দেয়ার অনুরোধ করেছিল। রিকার্ডো গুল্লোর মতে, এখনই সেই অনুরোধ রাখার সঠিক সময়।

১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে দ্বীপ থেকে ছাগল নেয়ার আবেদনের কথা বলা হয়েছিল। তবে একজন ব্যক্তি কতটি ছাগল নিতে পারবেন তার কোনো বাধাধরা সংখ্যা নেই। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শর্ত ছাড়াই তারা এ উপহার দিতে রাজি হয়েছে।

কিন্তু ছাগল দেয়া বললেই তো দেয়া হয়ে যাচ্ছে না। প্রথমে ছাগল ধরতে তো হবে। সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে তা-ই হলো প্রধান সমস্যা। ছাগলগুলো আকমণাত্মক আচরণ করতে পারে, এটাও একটা সমস্যা। তবে বড় কথা হলো, তাদের ধরা হবে কোন উপায়ে। পরিবহনও ভীষণ ঝক্কির ব্যাপার।

দ্বীপটিতে রয়েছে শঙ্কু আকৃতি চূড়ার পাহাড়, আর সেখান থেকে ছাগল নামিয়ে আনতে হবে। নামিয়ে আনাটা এখন কৌশলগত সমস্যা। কেউ কেউ বলছেন, সবচেয়ে ভালো হয় যদি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা যায়। এতে একেবারে দুটি বা তিনটি ছাগল নামিয়ে আনা যাবে। কিন্তু চমৎকার এ প্রস্তাবের কোনো লজিস্টিকস সমাধান আপাতত কারো কাছে নেই।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন