তরুণদের স্থূলতা

সারা বিশ্বেই তরুণ-তরুণীদের সাধারণ স্বাস্থ্যঝুঁকি

ফারিন জাহান সিগমা

ছবি: মাসফিকুর সোহান

বর্তমানে স্থূলতা একটি জটিল সমস্যা হয়ে উঠেছে। যার কারণে একজন ব্যক্তির ওজন তার উচ্চতা অনুযায়ী বেশি হয়। বর্তমানে স্থূলতা প্রাপ্তবয়স্ক, এমনকি ◌িকশোর ও শিশুদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। খাওয়ার ধরন, শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা ও ঘুমের রুটিন, অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, দিনের অধিকাংশ সময় শুয়ে-বসে থাকা ইত্যাদি কারণে শরীরে অতিরিক্ত ওজন যোগ হয়। এছাড়া জেনেটিক্স এবং নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণও ওজন বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে। 

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হলে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হবে। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১২ বছরে ৪০০ কোটি মানুষ স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের শিকার হবে এবং শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এ হার সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলেও এতে আশঙ্কা করা হয়েছে।

বেশকিছু দেশের জন্য এটি একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা। প্রতিবেদনটি বিশেষ করে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে স্থূলতার ক্রমবর্ধমান হারকে সামনে এনেছে। নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে স্থূলতার প্রভাবও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, নিম্ন আয়ের দেশগুলো প্রায়ই তরুণদের স্থূলতা ও এর পরিণতিগুলোর সম্পর্কে অবগত না। বিশ্বব্যাপী স্থূলতা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি যে ১০টি দেশে আশঙ্কা করা হচ্ছে তার মধ্যে ৯টি আফ্রিকা ও এশিয়ার নিম্ন বা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ।

প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে স্থূলতাজনিত খরচ দাঁড়াবে বার্ষিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক লুইস বাউর এ প্রতিবেদনের ফলাফলগুলোকে মারাত্মক উল্লেখ করে এখনই পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন। 

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শৈশব স্থূলতা ২০২০ সালে যে পরিমাণ ছিল তা থেকে দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে, ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রায় ২০ কোটি ছেলে এবং ১৭ কোটি মেয়ে স্থূলতাজনিত সমস্যায় ভুগবে। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে স্থূলতার হার দ্রুত বাড়ছে জানিয়ে প্রতিবেদনটিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। 

এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কভিড লকডাউন সম্ভবত প্রবণতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। অনুসন্ধানগুলোর ভিত্তিতে ধারণা করা যায়, বিশ্বজুড়ে স্থূলতার হার বৃদ্ধির ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে। প্রতিবেদনে জোর দেয়া হয়েছে, স্থূলতার অর্থনৈতিক প্রভাবের স্বীকৃতি কোনোভাবেই স্থূল ব্যক্তিদের দায়ী করা নয়।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শৈশবকালীন স্থূলতা বাড়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে আর্থসামাজিক উন্নয়ন, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। এছাড়া রয়েছে জীবনযাত্রার পরিবর্তন, জীবনযাত্রার ধরন, মহামারী ও জনসংখ্যাগত পরিবর্তন। এছাড়া বাংলাদেশে স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজন অল্পবয়সীদের মধ্যে বেশি লক্ষ করা গেছে। 

এছাড়া অল্প বয়সে স্থূলতা আয়ুষ্কাল কমিয়ে দেয়। অল্পবয়সী মেয়েদের স্থূলতার কারণে মাসিককালীন সমস্যা ও গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপ এবং অন্যান্য নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন