পিত্তথলির রোগ

সুস্থ থাকতে যা খাবেন

ছবি : বণিক বার্তা

পেটের ওপরের ডানদিকে নাশপাতির মতো ছোট একটি অঙ্গ পিত্তথলি। হজমে সহায়তা করাই এর প্রধান কাজ। পিত্তথলির মধ্যে থাকে পিত্তরস বাবাইল বাইল তৈরি করে লিভার। খাওয়ার আগে গলব্লাডার পিত্তরসে পূর্ণ থাকে। খাওয়া শেষ হলে চুপসে যায়। পিত্তরস খাবারের সঙ্গে মিশে হজমে সাহায্য করে। পিত্তরস কাজ করতে না পারলে খাবার হজমে সমস্যা হয়। শরীরে কোলেস্টেরল, বাইল সল্টের পরিমাণ বেড়ে গেলে তৈরি হয় গলব্লাডারে পাথর। পিত্তথলিতে পাথর সাধারণত ৩০-৪০ বছর বয়সে হয়, তবে যেকোনো বয়সেই হতে পারে। সাধারণত পুরুষদের তুলনায় নারীরা রোগটিতে বেশি আক্রান্ত হন। পিত্তথলিতে পাথর হলে দেশের অভ্যন্তরেই উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। তবে রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগের প্রতিরোধ সব দিক থেকেই উত্তম। পিত্তথলিকে সুস্থ রাখতে নিচের কয়েকটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়া জরুরি।

স্বাস্থ্যকর খাবার: কম চর্বি কোলেস্টেরলযুক্ত সুষম খাদ্য পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ফল শাকসবজি, গোটা শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিন খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ; যা স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে পিত্তথলির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর ওজন: অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। ধীরে ধীরে ওজন কমানো এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা পিত্তথলির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

সক্রিয় থাকা: নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে এবং পিত্তথলির পাথর হওয়ার আশঙ্কা কমাতে সহায়তা করতে পারে।

ক্র্যাশ ডায়েট: ক্র্যাশ ডায়েটের ফলে দ্রুত ওজন কমতে পারে, যা পিত্তথলির ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত ওজন বা যারা হঠাৎ করে খুব বেশি ওজন কমিয়ে ফেলেছেন বা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকেন, তারাও আক্রান্ত হতে পারেন পিত্তথলির পাথরে।

অ্যালকোহল সেবন: অত্যধিক অ্যালকোহল পান করা পিত্তথলিতে পাথরের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

ওষুধ গ্রহণ: কিছু ওষুধ, যেমন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কোলেস্টেরল হ্রাসকারী ওষুধ পিত্তথলির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। আপনি যে ওষুধ গ্রহণ করছেন তার সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।

পরিপূরক: ভিটামিন সির মতো পরিপূরক গ্রহণ পিত্ত পাথরের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। ভিটামিন সির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দিতে পারে; অতএব এটি সর্বদা শুধু একজন ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত পরিপূরক গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম: পিত্তথলির যেকোনো সমস্যা থেকে আপনাকে দূরে রাখবে। আসলে অতিরিক্ত ফ্যাট জমলেই তা পিত্তথলির ক্ষতি করে। বিশেষজ্ঞের মতে, দিনে অন্তত ২০ মিনিট ব্যায়াম করলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমবে। সেই সঙ্গে পিত্তথলির পাথর হওয়ার ঝুঁকিও কমবে।

প্রাথমিক প্রচেষ্টা: পেটের ওপরের ডানদিকের অংশে ব্যথা অনুভব করলে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। কাঁচা হলুদে থাকা কারকুমিন উপাদান জ্বালা ব্যথা দুটিই কমাতে কার্যকর। চায়ে দিয়ে হলুদ খেতে পারেন।

পুদিনা পাতার চা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। পেটের ব্যথা, মাথার ব্যথা দূর করতে এটি দারুণ কাযর্কর। পিত্তথলিতে ব্যথা হলে নিয়মিত পুদিনা পাতার চা খেতে পারেন। এর ঠাণ্ডা প্রভাব ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপ রোধ: মধ্যবয়সের মানসিক চাপ এবং তার হাত ধরে ভুলভাল খাওয়া ওজন বৃদ্ধির সমস্যা এড়াতে দরকার রিল্যাক্সেশন থেরাপি। নিয়মিত ব্যায়াম, যোগ, মেডিটেশন ভালো লাগা কাজের চর্চা সে কাজে সাহায্য করতে পারে।

সূত্র: মেদান্তা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন