করোনারি হার্ট ডিজিজ

হার্ট সতেজ রাখতে যা খাবেন

ফিচার ডেস্ক

ছবি: হার্ভার্ড হাসপাতাল

আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া

যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ আছে সেসব খাবার খাওয়া।  এসব খাবারের কারণে শরীরে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়, যা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

বেশি আঁশ আছে— এ রকম সবজির মধ্যে রয়েছে শিম ও মটরশুঁটি জাতীয় সবজি, কলাই ও ডালজাতীয় শস্য এবং ফলমূল।

পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, আলু ও শেকড়জাতীয় সবজি খোসাসহ রান্না করলে সেগুলো থেকেও প্রচুর আঁশ পাওয়া যায়।

স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট-বাঁধা চর্বি জাতীয় খাবার কমানো 

খাদ্যবিজ্ঞানীরা বলছেন, যেসব খাবারে বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট বাঁধা চর্বি থাকে সেসব খাবার খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকিও। চিজ, দই, লাল মাংস, মাখন, কেক, বিস্কুট ও নারকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।

তারা বলছেন, হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে হলে স্যাচুরেটেড নয় এমন চর্বি (যেসব খাবারের ওপর চর্বি জমাট বাঁধে না) সে ধরনের খাবার খেতে হবে। যেমন তেলসমৃদ্ধ মাছ, বাদাম ও বীজ। অলিভ, রেপসিড, সানফ্লাওয়ার, কর্ন ও ওয়ালনাট তেল দিয়ে রান্নার বিষয়ে তারা জোর দিয়েছেন।

দুধের বেলায় স্কিমড বা সেমি-স্কিমড (দুধ থেকে চর্বি সরিয়ে নেয়া) দুধ খেতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে খাবারে যাতে বাইরে থেকে চিনি মেশানো না থাকে। লাল মাংসের বদলে খেতে হবে মুরগির মাংস। মুরগির চামড়া তুলে ফেলে দিন। গরুর মাংস খেলে তার ওপর থেকে চর্বি ফেলে দিয়ে রান্না করতে হবে।

সপ্তাহে অন্তত একদিন এমন মাছ খেতে হবে যাতে প্রচুর তেল আছে।

ক্রিস্প ও বিস্কুটের বদলে নানা ধরনের বাদাম ও বীজ খেতে পারেন।

লবণ কম খাওয়া 

লবণ বেশি খেলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। ফলে বৃদ্ধি পায় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও।

ব্রিটেনে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয় যে এনএইচএস থেকে তাদের পরামর্শ হলো দিনে সর্বোচ্চ ৬ গ্রাম (এক চা চামচের পরিমাণ) লবণ খাওয়া যেতে পারে।

তারা বলছে, লবণ কম-বেশি খাওয়া একটি অভ্যাসের ব্যাপার। লবণ যত কম খাওয়া হবে তার চাহিদাও তত কমে যাবে।

এ অভ্যাস বদলাতে মাত্র চার সপ্তাহের মতো সময় লাগে। এই সময় পর দেখা যাবে আপনি যে খাবারের সঙ্গে লবণ খাচ্ছেন না, সেটি আপনি বুঝতেই পারবেন না।

খাদ্যবিশেষজ্ঞ বলছেন, লবণের পরিবর্তে মসলা দিয়ে খাবার প্রস্তুত করলে তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবে।

ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া

যেসব খাবারে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ বেশি থাকে সেগুলো আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

শুধু তাই নয়, এসব খাবার হৃদরোগের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়।

ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো খনিজ উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে। হৃদরোগের যেসব কারণ আছে সেগুলো ঠেকাতেও এসব খনিজ ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে।

অনেক খাদ্যবিশেষজ্ঞ মনে করেন, স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েটের মাধ্যমেই এসব ভিটামিন ও খনিজ পাওয়া সম্ভব।

এসবের জন্যে ট্যাবলেটের ওপর নির্ভর করতে হবে না। তবে তার মধ্যে ব্যতিক্রম হচ্ছে ভিটামিন ডি।

মাছ, দুগ্ধজাত খাবার ও হোলগ্রেইনে পাওয়া যায় ভিটামিন বি। 

ডাল ও হোলগ্রেইনে ম্যাগনেশিয়াম। দুগ্ধজাত খাবার ও সবুজ পাতার সবজি থেকে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা 

ওজন বাড়ায় এমন খাবারদাবার কম খাওয়া। যেমন চিনি, লবণ, স্যাচুরেটেড চর্বিযুক্ত খাবার কম খাওয়া, ভিটামিন ও মিনারেল আছে এ রকম খাবার বেশি খাওয়া। স্থূলতা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে কোমরে চর্বি জমা হলে। ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

সূত্র: মায়ো ক্লিনিক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন