শিশুর শ্রবণশক্তি

শিশুর শ্রবণশক্তি ঠিক আছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

ডা. এমআর ইসলাম

শিশুর শ্রবণশক্তি ঠিকঠাক আছে কিনা জন্মের পর পরই তা খেয়াল করা দরকার। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু লক্ষণ দেখেও শিশুর শ্রবণশক্তির ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায়। জন্মের পর থেকে এক বছর বয়স পর্যন্ত নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ করবেন। 

জন্মের পর: খেয়াল করুন, আচমকা কোনো শব্দ হলে নবজাতক চমকে উঠছে কিনা। হাততালি, উচ্চৈঃস্বর, দরজা বা জানালা লাগানোর শব্দ শুনে শিশুর কিছু শারীরিক প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে। এক্ষেত্রে চোখের পাতা নড়ে ওঠা, চোখ বন্ধ করা বা চোখের পলক ফেলার মতো ঘটনা ঘটবে। এমনটি হলে ধরে নিতে পারেন, নবজাতকের শ্রবণশক্তি ভালো আছে। তবে হাসপাতালে জন্মদান করলে হাসপাতাল ছাড়ার আগে শিশুর শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করিয়ে নেয়া ভালো। 

এক-চার মাস: এক মাস বয়স হলে যেকোনো শব্দের সঙ্গে শিশুর যোগাযোগের স্থায়িত্ব বাড়বে। মোবাইলের রিংটোন, গান, ফ্যানের আওয়াজ, গাড়ির হর্ন প্রভৃতি শব্দ শুনলে শিশু স্থির হয়ে সেই শব্দের উৎসের প্রতি মনোযোগী হয়ে থাকে। এ রকম মনোযোগ দিয়ে কোনো শব্দ শুনতে থাকলে বুঝবেন শিশুর শ্রবণশক্তি ঠিক আছে। 

চার-সাত মাস: চার মাস বয়স হলে অন্য শব্দের প্রতিক্রিয়ায় শিশুর নিজের ভেতর পরিবর্তন দেখা যাবে। যেমন শিশু কাঁদতে থাকলে আপনার গলার স্বর বা অন্য কোনো শব্দ শুনে চুপ হয়ে যাবে বা কান্নার মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। ঘাড় ঘুরিয়ে শব্দের উৎস খোঁজার চেষ্টা করবে। 

সাত-নয় মাস: এ বয়সে শিশু যেকোনো শব্দ শুনলে তাৎক্ষণিক সেদিকে তাকাবে। শব্দের অনুকরণে নিজেও শব্দ করার চেষ্টা করবে। 

নয় মাস-এক বছর: নয় মাস বয়স পেরিয়ে গেলে সাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে শিশুর সক্ষমতা বাড়বে। যেকোনো শব্দ শুনে নিজের মুখ দিয়ে নানা রকম শব্দ তৈরি করবে। আপনি সামনে-পেছনে বা আশপাশ থেকে শব্দ করে আহ্বান করলে শিশুর মুখের ভঙ্গিতে পরিবর্তন আসবে। যেমন হাসবে, কাঁদবে বা বিরক্তি প্রকাশ করবে। 

এক বছর পর: এক বছর বয়স হয়ে গেলে শিশুর সাড়াদানের ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। এ বয়সী শিশুদের নাম ধরে ডাকলে শিশুরা সাড়া দেয়। তাছাড়া দ্রিম দ্রিম, ভোঁ ভোঁ, টা টা প্রভৃতি অর্থহীন শব্দ শুনলেও শিশু সাড়া দেবে।

যথাসময়ে খেয়াল না করলে আপনার শিশু শ্রবণ দুর্বলতা বা শ্রবণশক্তিহীন হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। তাই কোনো রকম অসংগতি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। কেননা, শুরুতে সমস্যা ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে তা সারিয়ে তোলা সম্ভব।

লেখক: নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন 

কনসালট্যান্ট, ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন