নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

কার কেমন পরীক্ষা করানো প্রয়োজন

বণিক বার্তা ডেস্ক

বর্তমানে যুগ যেমন বদলেছে, তেমনই বদলেছে জীবনযাপনের ধরন। ফলে নতুন নতুন সব ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে জীবনের জন্য। তাই শুরুতেই কোনো সমাধান না করলে বড় হয়ে যাচ্ছে ছোট সমস্যাও। 

এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২৭ থেকে ৬০ বছর বয়সী সবারই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা প্রয়োজন। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসার কারণে খুব কম বয়সেই অনেক রকম সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বংশগত রোগ-বালাই তো থাকছেই, পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের বেশির ভাগই কম ঘুমে অভ্যস্ত। তারা রাতে জেগে থাকে আর দিনে ঘুমায়। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মানসিক চাপ। সব মিলিয়ে কোলেস্টেরল, উচ্চরক্তচাপের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যা দেখা যাচ্ছে অহরহ। এসবের মিলিত ফল হৃদরোগ। তাই আগে থেকেই সবার নিজেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে রাখা জরুরি। তাতে যেমন সুস্থ থাকতে পারবেন তেমন টাকাও বাঁচবে। এভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেকে কিছু রোগের ঝুঁকি থেকে বাঁচানো সম্ভব।  

সোয়াকন ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল এক লেখায় জানিয়েছে, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে মানসিক চাপসংক্রান্ত রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। রাস্তাঘাটের তীব্র যানজট, কাজের প্রবল চাপ, অস্বাভাবিক আবহাওয়া—এসবের ফলে আমরা কেউই চাপমুক্ত নই। সবাই উচ্চমাত্রার চাপ অনুভব করছে, তাতে মানসিক চাপ সম্পর্কিত রোগের ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে। এতে করে যেমন মানসিক ডিজঅর্ডার তৈরি হচ্ছে তেমন শারীরিক সমস্যাও দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে সেটা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।  

বার্ষিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রক্তের অবস্থা বোঝা যাবে। ঠাণ্ডা বা জ্বরের মতো সাধারণ রোগের কিছু লক্ষণ আমরা সবাই জানি। কারণ এগুলোর শারীরিক প্রকাশ আছে। কিন্তু কিছু রোগ আছে যেগুলো পরীক্ষা না করানো হলে আরো খারাপ হতে পারে। সেজন্য ডাক্তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষার কথা বলেন। এটা সবার বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদিও আপনার ঠিক কোন রক্ত পরীক্ষা করা দরকার তা নির্ভর করবে বয়স ও জীবনযাপনের ওপর। 

পর্যায়ক্রমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি নিজের বিষয়ে আরো সতর্ক হতে পারবেন। বেশির ভাগ মানুষই তাদের স্বাস্থ্যকে বেশি গুরুত্ব দেয় না। যতক্ষণ না পুরো অসুস্থ হয়ে পড়ে ততক্ষণ অনেকে হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে যেতেও চায় না। একই কারণে আমরা আমাদের খাবার বা ব্যায়ামের বিষয়েও খারাপ সিদ্ধান্ত নিই। পর্যায়ক্রমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালে আপনি আপনার স্বাস্থ্যের বিষয়ে আরো বেশি সতর্ক হবেন। তখন আরো বেশি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে সক্ষম হবেন। এর জন্য শুধু মাঝে মাঝে আপনাকে হাসপাতালে যেতে হবে বা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। 

বার্ষিক পুরো শরীর পরীক্ষা করলে মোটের ওপর কম খরচ হবে। যদি বছরে একবার পুরো শরীর চেকআপ করেন বা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেন তাহলে বেশকিছু রোগ প্রতিরোধ করতে বা এড়াতে পারবেন, সেই সঙ্গে কিছু রোগের চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন শুরুতেই। ফলে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমবে। তাতে মেডিকেল খরচ বাঁচবে। এক্ষেত্রে সময়ের বিষয়টাও বিবেচনা করতে ভুলবেন না। অসুস্থ হয়ে পড়লে দীর্ঘ সময় অফিস বা স্কুল থেকে বিরতি নিতে হবে। পাশাপাশি প্রভাব পড়বে আপনার দৈনন্দিন জীবনযাপনে। নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে অসুস্থ হওয়ার এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি কমবে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন