থাইরয়েড

নজর দিতে হবে খাদ্যাভ্যাসেও

বণিক বার্তা ডেস্ক

বেশির ভাগ মানুষই থাইরয়েডের সমস্যাকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না। তবে চিকিৎসকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, সময়মতো চিকিৎসা না করানো হলে ধীরে ধীরে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত হলে শুধু ওষুধ খেলেই হয় না যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টিকর খাবারও খেতে হয়। আবার কিছু খাবার তালিকা থেকে বাদও দিতে হয়। থাইরয়েড যেহেতু হরমোনের ভারসাম্যকে নষ্ট করে, তাই এ সমস্যা থাকলে বেশকিছু খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেয়া উচিত।

টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফিসিকো ডায়েট ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা ডা. বিধি চাওলা বলেন, ‘‌হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ ও উপসর্গ কমাতে টিএসএইচ বা থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে থাইরয়েডের ওষুধ ব্যবহার করা যায়। পাশাপাশি এ রকম সমস্যায় খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা পরিবর্তন করলেও বেশ উপকার পাওয়া যায়।’

চাওলার মতে, থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিলে কিছু নির্দিষ্ট খাবার খাবারের তালিকায় যুক্ত করা এবং নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খাওয়া উপকারী। এগুলো দেহের থাইরয়েড হরমোন বাড়ানো বা কমানোর ওপরে প্রভাব রাখে।

ডিম, পনির, লবণ ও দুধ হলো আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার। থাইরয়েড কম বা বেশি হওয়ার সমস্যা দেখা দিলে এসব খাবার গ্রহণে সতর্ক থাকতে হবে। সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হলো টুনা, মুরগি, ওট মিল, বাদামি চাল, ডিম। এগুলোয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে যেগুলো থাইরয়েড হরমোন সংশ্লেষণে ভূমিকা রাখে। আর এটা প্রাকৃতিকভাবেই থাইরয়েড কোষে পাওয়া যায়। জিংকসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে সবজি, দই, শস্য, কুমড়ার বীজ ও মুরগি। সেলেনিয়ামের সঙ্গে জিংকের পরিপূরক মিলিত হলে হাইপোথাইরয়েড হওয়া নারীদের থাইরয়েডের কার্যকারিতা বাড়ায়।

থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিলে মাল্টি গ্রেইনের বদলে বরং হোল গ্রেইন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। হোল গ্রেইনে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, আয়োডিন থাকে, যা থাইরয়েড রোগীদের জন্য খুব জরুরি। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে পাউরুটি, পাস্তাজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত।

শরীরে চর্বি হলে থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে হরমোন তৈরিতে বাধা দেয়। তাই অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, মাখন, তেলে ভাজা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা দরকার। 

এছাড়া পুষ্টিবিদদের মতে থাইরয়েডের সমস্যা হলে প্যাকেটজাত খাবার বা প্রসেস খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত। যেমন বিস্কুট, চিপস, মাল্টি গ্রেইন ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রিজারভেটিভ, লবণ ও সোডিয়াম দেয়া থাকে। থাইরয়েডের ক্ষেত্রে যা খাওয়া একদম উচিত নয়। সোডিয়াম উচ্চরক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।

শরীরে আয়োডিন ও প্রোটিন মিশে থাইরয়েড হরমোন তৈরি করে। তাই খাদ্যাভ্যাসে দই, চিজ, বাদাম, ডিম, মাছ, মাংস, ডাল রাখুন। সয়াবিন খাওয়া বাদ দিন। কারণ এতে থাকা আইসোফ্ল্যাভিন থাইরয়েডের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হতে পারে।

এছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে ফুলকপি, ব্রকলি, বাঁধাকপি খাওয়া বাদ দিতে হবে। এছাড়া মিষ্টি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার, কফি, অ্যালকোহল, কোমল পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। পাশাপাশি অবশ্যই নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন