সিলেটে আজ প্রথম ওয়ানডে

উজ্জীবিত টাইগারদের সামনে এবার আইরিশরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল কেক কেটে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেন মুশফিক-তামিমরা ছবি: বিসিবি

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টি২০ সিরিজে হারানোর টাটকা স্মৃতি নিয়েই আজ ইউরোপের আরেক দেশ আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসেছে আইরিশরা। ওয়ানডে সিরিজ দিয়েই দ্বৈরথের শুরু। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বেলা ২টায় শুরু হবে প্রথম ম্যাচ।

ইতিহাস বর্তমান ফর্মের বিচারে আজ ফেভারিট হিসেবেই নামবে বাংলাদেশ। ২০০৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১০ ম্যাচের মুখোমুখিতে সাতটিতে জিতেছে বাংলাদেশ, আইরিশরা জিতেছে দুটি আর একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। আবার পাঁচ ম্যাচের টি২০ লড়াইয়েও -- এগিয়ে বাংলাদেশ।

সদ্যই হোম সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফর্ম করে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে -- পরাজিত হলেও টি২০ সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করে টাইগাররা। সেরা দল নিয়ে না এলেও ইংলিশরা বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলে টি২০ ফরম্যাটে তাদের হারানো সাকিব আল হাসানের দলের জন্য অবিস্মরণীয় এক সফলতাই। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দল টি২০-এর ফর্ম এবার ওয়ানডেতে টেনে নিতে চাইবে।

২০১৬ সালের পর সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে হোম সিরিজে হেরে যায় বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, এর আগের হারটাও এসেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। পরিসংখ্যানই বলে দেয় ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের মাঠে কতটা শক্তিশালী বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিং কিংবা পরে ব্যাটিংযেকোনো ক্ষেত্রেই তারা মানিয়ে নিতে পারে।

শক্তিশালী পেস বোলিং আক্রমণ নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে বাংলাদেশ। এখন পেস বোলিং ইউনিটও বাংলাদেশকে জেতাচ্ছে, যা আগে কদাচিৎ ঘটত। আগে থেকেই স্পিন শক্তি ছিল, সঙ্গে পেস ভাণ্ডার যুক্ত হয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতেও কম ক্রিকেট খেলেছে আইরিশরা। গত নয় মাসে ইউরোপের দেশটি মাত্র দুটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে, যার মধ্যে গত জুলাইয়ে হোম সিরিজে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে --তে, আর বছর জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের মাঠে ড্র করে --এ। ঠিক একই সময় বাংলাদেশ ১২টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে, সময় টাইগাররা ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিকিটও নিশ্চিত করে। আবার উপমহাদেশে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও কম আইরিশদের।

বাংলাদেশের ভেন্যুগুলোর মধ্যে সিলেটে সবচেয়ে বেশি রান ওঠে। ভেন্যুটি রানস্বর্গই বলা চলে। যদিও হাথুরুসিংহে আশা করেন, এবার ফাস্ট বোলাররা কিছুটা সুবিধা পাবে। ভেন্যুতে বাংলাদেশও খুব বেশি খেলেনি। সিলেটে চারটি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছে, সর্বশেষটি ২০২০ সালে। এখানে সর্বশেষ সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচেই তিনশোর বেশি রান তুলে প্রতিটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ।

জানা গেছে, খানিকটা ভারতের কন্ডিশনের মতো বলেই বিশ্বকাপ সামনে রেখে সিলেটে ওয়ানডে সিরিজ আয়োজনের পরিকল্পনা করে বিসিবি। সচরাচর ঢাকাতেই বেশি ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশ, কিছু হয় চট্টগ্রামে। তবে ক্রিকেটারদের অনেকেরই ধারণা, ভারতের বেশির ভাগ মাঠ পিচই ঢাকার মতো নয়। কাজেই সিলেট চট্টগ্রামে সাদা বলের আরো বেশি করে ম্যাচ খেললে তারা বড় স্কোর গড়া তা ডিফেন্ড করা রপ্ত করতে পারবেন। 

ওয়ানডে সিরিজে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। একে কেউ কেউ তার শেষ দেখছেন। যদিও হাথুরুসিংহে জানালেন, এটা নিশ্চিতভাবেই মাহমুদউল্লাহর শেষ নয়।

লংকান কোচ দলে ইয়াসির আলী, তৌহিদ হৃদয়, রনি তালুকদার, নাসুম আহমেদ শরিফুল ইসলামের মতো খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়ে দেখতে চান, যাতে তারা নিজেদের মেলে ধরতে পারেন। গতকাল সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে হাথুরু বলেন, ‘‌তারা যেভাবে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে, তেমন স্বাধীনতা নিয়েই সিরিজে খেলতে পারে। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স দেখেই আমরা তাদের নিয়েছি। আমরা দেখতে চাই, কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে পারে।

মাহমুদউল্লাহর ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‌আমি মনে করি না সে তার সেরা সময় ফেলে এসেছে। আসলে বিশ্বকাপের আগে আমরা আমাদের পুলটা বাড়াতে চাই। আমরা চাই আরো কিছু খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পদচিহ্ন রাখুক। তার মানে এই নয় যে, যদি ওই ছেলেটি ভালো খেলে, তবে মাহমুদউল্লাহ শেষ। সে এখনো আমাদের পরিকল্পনায় আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন