অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স

দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ বেশি শিশুদের ওপর

বণিক বার্তা ডেস্ক

দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিব্যবহার অপপ্রয়োগ বাড়ছে। অনিয়ন্ত্রিত বিক্রি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর তদারকির দুর্বলতার সুযোগে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিমাত্রায় প্রয়োগ চলছে। স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, অনেক ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অণুজীব প্রতিরোধী ওষুধ গ্রহণ করছেন রোগীরা। এক্ষেত্রে অনিবন্ধিত, হাতুড়ে অযোগ্য চিকিৎসক বা ওষুধের দোকানদারের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের ঘটনা ঘটছে বেশি। এসব ক্ষেত্রে যথাযথভাবে রোগীর রোগ নির্ণয়ও করা হচ্ছে না।

স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মূল্যায়নে উঠে এসেছে, শিশুদের ওপর অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে নিবন্ধনহীন চিকিৎসকরা রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন বেশি। যথাযথ যোগ্যতাহীন চিকিৎসকদের কাছ থেকে আসা ব্যবস্থাপত্রের ৮৩ শতাংশেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরামর্শ থাকে।

অ্যান্টিবায়োটিকের অতিব্যবহার অপপ্রয়োগ সবচেয়ে বেশি দেখা যায় শিশুদের ওপর। যদিও শিশুদের ওপর অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের বিষয়ে বরাবরই সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলে এসেছেন বিশেষজ্ঞরা। আবার বিশেষজ্ঞের ব্যবস্থাপত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার-সংক্রান্ত যথাযথ পরামর্শ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই কোর্স শেষ করা হচ্ছে না। এতে সংক্রমণ ঘটানো জীবাণুগুলো হয়ে উঠছে শক্তিশালী। দেশে-বিদেশে শিশুদের দেহে সংক্রমণ ঘটানো জীবাণুর অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে ওঠার তথ্য প্রায়ই নানা মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।

শুধু অ্যান্টিবায়োটিক নয়, যেকোনো ওষুধের অতিমাত্রায় অপপ্রয়োগের ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশে প্রয়োজন ছাড়াই বিভিন্ন ওষুধের প্রয়োগ হচ্ছে। প্রাত্যহিক জীবনে মানুষের মধ্যে ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরির ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। যে কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ওষুধের দোকানে যাচ্ছে। এর সুযোগ নিচ্ছেন ক্ষুদ্র বড় অসাধু ব্যবসায়ীরা। অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের ফলে মানুষ তাত্ক্ষণিকভাবে ভালো ফলাফল পায় বলেই শুরুতে তা গ্রহণ করছে। কিন্তু এর অপপ্রয়োগে এএমআর তৈরির পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কেউই সচেতন নয়।

স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যথানিয়মে অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শেষ করে না ৪১ শতাংশ রোগী। তাদের মধ্যে বড় একটি অংশ শিশু। এছাড়া অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক যথেচ্ছ প্রয়োগের প্রবণতাও রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।

তাতে করেই ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে আজকের শিশুদের।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন