স্লিপ অ্যাপনিয়া সারা বিশ্বের একটি অবহেলিত ঘাতক ব্যাধি। এখনো স্লিপ অ্যাপনিয়ায় শতকরা ৯০ শতাংশ রোগী চিকিৎসার আওতার বাইরে। দেশের ভেতরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রোগের চিকিৎসা রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে রোগটি সম্পর্কে আরো সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জন ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রায় তিন কোটি মানুষ স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে ভুগছে। এ রোগে আক্রান্তদের ঘুমের মধ্যে কিছু সময়ের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। এশিয়া মহাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ইউরোপ-আমেরিকার ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ এই স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে আক্রান্ত।
অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জনস ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু জানান, মানুষ তার জীবনের এক-তৃতীয়াংশ ঘুমিয়ে কাটায়। ঘুম মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কাজ। ঘুমের অভাবে নানা ধরনের জটিল সব রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। পৃথিবীতে কভিড-১৯ এর আগে ৫৫ শতাংশ এবং কভিড-১৯ এর পরে ৭৭ শতাংশ মানুষ পর্যাপ্ত ঘুমের জটিলতায় ভুগছেন। তার মধ্যে ২৪ থেকে ২৯ শতাংশ মানুষ নাক ডাকা ও স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে ভুগছেন। সারা বিশ্বেই এখন খুবই সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে উঠছে এ স্লিপ অ্যাপনিয়া। সারা বিশ্বে ১০০ কোটি মানুষ এ সমস্যায় আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্কদের ২ থেকে ৯ শতাংশ এ রোগে আক্রান্ত। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক আক্রান্তের সংখ্যাটা এর তুলনায় আরো বেশি হবে, কারণ অনেকেই কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান না।
পাবমেডে ২০১৯ সালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১৬টি দেশে পরিচালিত ১৭টি গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ৯৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মৃদু থেকে তীব্র পর্যায়ের স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত। পাশাপাশি ৪২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ সহনশীল থেকে তীব্র মাত্রার স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত। চীনে এ রোগে আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি বলেই উঠে আসে সেই সময়ের গবেষণায়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও ভারতেও সংখ্যাটা বেশ বেশি।