দুই দশক আগে দেশে রোগের স্বীকৃতি পায় ডেঙ্গু

ফিচার ডেস্ক

স্বাধীনতার আগে থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ থাকলেও চলতি শতাব্দীর শুরুতে সরকারিভাবে রোগটিকে আমলে নেয়া হয়। দুই দশক ধরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, রোগী ব্যবস্থাপনা এডিস মশা নির্মূলে কাজ করছে সরকার। তবে এখনো ডেঙ্গু মহামারী নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী।

২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশে সরকারিভাবে ডেঙ্গুকে রোগ হিসেবে দেখা হয়। সে বছরই সাড়ে পাঁচ হাজার ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ২০০০ সালে আক্রান্তদের ৬২ শতাংশ ডেঙ্গু জ্বর ৩৮ শতাংশ ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরে সংক্রমিত হয়েছিল। সে বছর মৃত্যুর হার দশমিক শতাংশ ছিল। মূলত ঢাকা, চট্টগ্রাম খুলনায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলেও তাদের সংক্রমণের কারণ এডিস এজিপটি মশা ছিল। তবে এডিস অ্যালবোপিকটাস চট্টগ্রামে সংক্রমণ ঘটায়। এর পরের বছরগুলোতে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা কম-বেশি হয়েছে। তবে ২০১৪ সালের পর থেকে প্রতি বছরই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেখা যায়। ২০১৫ সালে হাজার ১৬২ জন রোগীর মধ্যে ছয়, ২০১৬ সালে হাজার ৬০ জনের মধ্যে ১৪, ২০১৭ সালে হাজার ৭৬৯ জনের মধ্যে আট, ২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জনের মধ্যে ২৬ জন, ২০১৯ সালে রেকর্ডসংখ্যক লাখ হাজার ৩৫৪ জনের মধ্যে ১৭৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ২০২০ সালে প্রায় দেড় হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুর ঘটনা ২০১৯ সালে ঘটেছে। পরের বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় সাড়ে ২৮ হাজার আর মারা যান ১০৫ জন। চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৩১ হাজার অতিক্রম করেছে। আর মারা গেছেন ১১৩ জন ডেঙ্গু রোগী।

জানা যায়, বিশ্বে ১৭৮০ সালে প্রথম ডেঙ্গু মহামারী দেখা দেয়। এরপর ১৯৫০ সালে এশিয়ার থাইল্যান্ড ফিলিপাইনে ডেঙ্গু সংক্রমণ ছড়ায়। পরে ১৯৬৩ সালে ভারতের কলকাতা এবং ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশের ঢাকায় সংক্রমণ ঘটায় ডেঙ্গু। সে সময় ডেঙ্গুকে ঢাকা ফিভার নামে অভিহিত করা হয়। সারা বিশ্বে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খুব নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই এই রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। তথ্য বলছে, প্রতি বছর সারা বিশ্বের ১০ থেকে ৪০ কোটি মানুষ মশার কামড়ে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন