কনজাংটিভাইটিস : যদি সংক্রমিত হয় শিশু

ফিচার ডেস্ক

বড়রা তো বটেই, চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ছোটরাও। বড়রা তাদের সমস্যা বা ব্যথার কথা অন্যদের বুঝিয়ে বলতে পারলেও ছোটরা নিজেদের সমস্যা ঠিকঠাক প্রকাশই করতে পারে না। সেজন্য তারা আক্রান্ত হলে পরিবারের সবার ভোগান্তি বাড়ে বেশি, আবার চিকিত্সা দেয়াও কঠিন হয়ে যায়। চোখ ওঠা রোগ ছড়িয়ে পড়ার মৌসুমে শিশুদের নিয়ে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে বড়দেরই।

জেনে নিন শিশুদের চোখ ওঠার কিছু লক্ষণ

শিশুরা চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হলে হঠাৎ করেই শিশুর চোখ লাল হয়ে যেতে দেখা যায়। শিশু অনেক অস্বস্তিও বোধ করে। অনেক সময় চোখের উপরিভাগে পাতলা ঝিল্লির নিচে রক্তক্ষরণও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে হতে হবে সতর্ক।

ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুর চোখের পাতা ফুলে যায়। শিশুরা যেহেতু ব্যথার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে না, ফলে অনেক ক্ষেত্রে কান্নাকাটি করে শিশু।

ঘুম থেকে উঠলে দেখা যায় চোখে অনেক বেশি পিঁচুটি জমে চোখের পাতা আটকে রয়েছে। এছাড়া সারা দিন চোখ দিয়ে পানি পড়া ময়লা জমার সমস্যাও দেখা যায়। অনেক সময় শিশুর চোখে আলোর সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। শিশু সাধারণত আলোর দিকে তাকাতে পারে না। এসব সমস্যাই মূলত চোখ ওঠার লক্ষণ।

যা করবেন

পরিবারে কারো চোখ উঠলে তো বটেই, শিশুর চোখ উঠলেও বাবা-মাকে থাকতে হবে বাড়তি সচেতন। সেজন্য কিছু বাড়তি সতর্কতা মেনে চলতে হবে শিশুর যত্নকারীকেই। শিশুকে ভালো রাখতে শিশুর চোখ নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। চোখ ওঠার ফলে চোখে ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন হতে পারে। আর সেজন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি যেসব শিশু নিয়মিত স্কুলে যায় তাদের কিছুদিন স্কুলে না পাঠানোই ভালো। তাতে করে অন্য শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাবে। এক্ষেত্রে আক্রান্তদের কালো চশমা ব্যবহার করা খুবই দরকার। সন্তান ছোট হলে সে সহজে চোখে চশমা রাখতে চাইবে না। একটু বড় হলে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে চশমা পরাতে হবে। তাহলে শিশু নিজেও যেমন কিছুটা সুরক্ষিত থাকবে তেমন অন্যরাও কম ঝুঁকিতে থাকবে। তুলা ভিজিয়ে শিশুর চোখ পরিষ্কার করে দিন।

তবে চোখে বেশি ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল খাওয়ানো যেতে পারে।

যা করবেন না

শিশুর চোখ উঠলে অবশ্যই কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তার মধ্যে একটি হলো চোখে ঘন ঘন পানি দেয়ার প্রয়োজন নেই। একটি রুমাল ব্যবহার করার পর বারবার সেটি ব্যবহার করবেন না। এমনকি যদি শিশুর চোখ পরিষ্কারের জন্য টিস্যু পেপারও ব্যবহার করেন, তাহলেও সেটা একবার ব্যবহার করেই ফেলে দিতে হবে। একজনের চোখের ড্রপ অন্যজনের ব্যবহার করা উচিত নয়। তাতে করে চোখের ক্ষতি হতে পারে। শিশু চোখে যেন ময়লা হাত না দেয় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকুন। কারণ এতে সংক্রমণসহ চোখের বিভিন্ন রোগ হতে পারে। শক্ত কাপড় দিয়ে চোখ মুছে দেয়া থেকে বিরত থাকুন। সময় শিশুর চোখে কোনো ধরনের কাজল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুকে মোবাইল বা টেলিভিশন কম দেখতে দিতে হবে। ভেজা, স্যাঁতসেঁতে জায়গা, ধুলাবালি, আগুন বা রোদে যাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে।

তবে চোখ উঠলে শিশুকে সব ধরনের খাবার দিতে হবে। পাশাপাশি শিশুর চোখ ভালো রাখতে হলে পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। ছোট থেকেই শিশুর খাবারে গাজর, পেঁপে, ডিম, দুধ, মাছ, কলিজাসহ সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে। এতে ভিটামিন -এর অভাব হবে না। পাশাপাশি নিয়মিত শিশুকে ফল খাওয়ান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন