অ্যালঝেইমার রোগীদের জন্য কেয়ার গিভিং সেবা কেন জরুরি

ফিচার ডেস্ক

দেশে মূলত ষাটোর্ধ্ব মানুষের মধ্যে অ্যালঝেইমার রোগটি দেখা দেয়। প্রথমদিকে তাদের যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় সেগুলোর প্রতি পরিবারের অন্য সদস্যরা খুব গুরুত্ব দিতে চায় না। পরবর্তী সময়ে রোগটির তীব্রতা এত বেশি বেড়ে যায় যে তারা একসময় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ রোগটির তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন পরিস্থিতি হয় যে তারা মলমূত্র কখন হচ্ছে সেটি বুঝতে পারেন না। এসব রোগীর চিকিৎসায় ওষুধের পাশাপাশি প্রয়োজন কেয়ার গিভিং ব্যবস্থা চালু করা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যালঝেইমার রোগীদের সেবা দিতে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন রোগের ওষুধের দাম অত্যন্ত ব্যয়বহুল। দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা হওয়ায় ব্যয় বেড়ে যায় আরো বহুগুণে। এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। বিপরীতে তাদের যত্ন নেয়ার লোকের মারাত্মক অভাব রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা চাকরিজীবী হলে সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করে।

জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল ইনস্টিটিউটের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এটিএম হাছিবুল হাসান বণিক বার্তাকে বলেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শুরুতেই দেশে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কেয়ার গিভিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কেয়ার গিভার থাকবেন। থাকবে রোগীদের জন্য সব ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থাও। এটি বাস্তবায়িত হলে পারিবারিক পরিবেশেই রোগীদের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে।

ডা. এটিএম হাছিবুল হাসান বলেন, রোগটির তীব্রতার ফলে রোগীরা অস্বাভাবিক আচরণ করেন। এতে স্বজনরা প্রথমে মানসিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। এজন্য সঠিক চিকিৎসা পেতে সময় লেগে যায় অনেক বেশি। অ্যালঝেইমারে আক্রান্ত রোগীদের প্রধানত স্নায়বিক রোগ বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। কিন্তু দেশের জনসংখ্যা অনুপাতে স্নায়বিক রোগ বিশেষজ্ঞও অত্যন্ত কম। পাশাপাশি অ্যালঝেইমারে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা একেবারে অপ্রতুল। সরকারিভাবে দেশে শুধু তিনটি হাসপাতালে রোগটির চিকিৎসা কার্যক্রম রয়েছে। তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল ইনস্টিটিউট।

সংকট উত্তরণের দিক তুলে ধরে চিকিৎসক বলেন, সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বয়স্কদের জন্য একটি বিভাগ খোলা হয়েছে। এর আদলে দেশের অন্যান্য সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও সেবা চালু করতে পারলে বয়স্কদের সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে যেসব মেডিসিন চিকিৎসক রয়েছেন তাদেরও ডিমেনশিয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে। এছাড়া দেশের সব সরকারি মেডিকেল হাসপাতালে নিউরোলজির আলাদা বিভাগ চালু করলে অ্যালঝেইমার রোগীদের সেবা দেয়া সম্ভব হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন