প্রতিস্থাপনের আগে লক্ষ রাখতে হবে

রক্তরোগের যেকোনো বয়সী রোগীদের বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট বা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের সুযোগ রয়েছে। তবে প্রতিস্থাপনটি করতে হয় উপযুক্ত সময়ে। প্রতিস্থাপনের আগে রোগীদের কিছু বিষয়ের ওপর লক্ষ রাখেন চিকিৎসকরা। যেমন রোগের অবস্থা, কর্মক্ষমতা, অর্গান ফাংশন টেস্ট, ডোনারের পর্যাপ্ততা রোগীর শারীরিক সক্ষমতা। এগুলো দেখে বোঝা যায় কখন কোন ধরনের প্রতিস্থাপন করাতে হবে রোগীকে।

যেসব রোগীর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের পর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাদেরই কেবল চিকিৎসা দেয়া হয়। কারণ এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন দুই ধরনের। অটোলোগাস ট্রান্সপ্লান্ট (রোগীর নিজের শরীরের কোষ) এবং অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্লান্ট (দাতার পক্ষ থেকে নেয়া) সাধারণত মায়েলোমা লিম্ফোমার ক্ষেত্রে অটোলোগাস ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হয়। আর ব্লাড ক্যান্সার, লিউকেমিয়া, অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হয়।

অটোলোগাস ট্রান্সপ্লান্টের জন্য রোগীকে আগে থেকে তৈরি হতে হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ ডা. মাফরুহা আক্তার বণিক বার্তা বলেন, প্রথমে কেমোথেরাপি দিয়ে রোগটি দমন করতে হয়। এরপর মাল্টিপল মায়েলোমা (এক ধরনের ক্যান্সার) যখন শেষ হয়ে যাবে তখন তাকে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের জন্য নেয়া হয়। তার আগে স্টেম সেল সংগ্রহ করতে হয়। অটোলোগাসের ক্ষেত্রে রোগীর নিজের শরীর থেকে স্টেম সেল নিতে হয়। আর অ্যালোজেনিকের ক্ষেত্রে বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এগুলো সংগ্রহের পর আবারো হাই ডোজ কেমোথেরাপি দেয়া হয় রোগীকে। এটি দেয়ার আগে তাকে ঝুঁকিমুক্ত করতে অবশ্যই স্টেম সেল প্রস্তুত রাখতে হবে। সময় হাই ডোজ কেমো দেয়ার কারণে রোগী দুর্বল হয়ে যায়। কারণে পরবর্তী সময়ে সংগ্রহ করা স্টেম সেল রোগীর শরীরে দিয়ে দিতে হয়। 

লিম্ফোমার (রক্তের এক প্রকার ক্যান্সার) ক্ষেত্রে যদি কেমোথেরাপি দিয়ে ভালো হয়ে যায় তাহলে প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। যদি কেমো দিয়ে কাজ না হয় তাহলে প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে নিজের শরীরের স্টেম সেল দিয়েই এটি করা হয়।

অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্লান্টের সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়। ডা. মাফরুহা আক্তার বলেন, কন্ডিশনিং বা হাই ডোজ কেমোথেরাপি দেয়ার আগে স্টেম সেল সংগ্রহ করা থাকে না। যেদিন স্টেম সেল দেয়া হয় ওই দিন সকালে বা তার আগের দিন সংগ্রহ করা হয় এটি। কোনো কারণে যদি ডোনার মিসিং হয় আর রোগীকে স্টেম সেল দেয়া না যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে রোগীটিও মারা যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন