চিকিৎসায় সাফল্যের হার কখন বেশি?

ফিচার ডেস্ক

দেশে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে সাফল্যের হার ৭০-৮০ শতাংশ। তবে সাফল্যের হার কখনো কম-বেশি হয়ে থাকে। এটি নির্ভর করে রোগীর বয়স, শারীরিক অবস্থা, রোগের ধরন, রোগীর সাইটোজেনেটিক প্রোফাইলের ওপর। এছাড়া থ্যালাসেমিয়া, অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, লিম্ফোমা মায়লোমার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন সাফল্যের হার দেখা যায়।

রক্তরোগ অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ ডা. দিলশাদ জাহান বণিক বার্তাকে বলেন, রক্তরোগের কোনো রোগী যদি হাই রিস্কের হয়, তাহলে তার অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে সাফল্যের হার কমে যায়। এক্ষেত্রে ৩০-৪০ শতাংশ হয়ে যায়। অটোলোগাস বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট বা লিম্ফোমা মায়লোমার ক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৫০-৬০ শতাংশ। অ্যাকিউট লিম্ফোমা বা ইন্টারমিডিয়েট রিস্কের ক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৬০-৭০ শতাংশ হয়। তবে থ্যালাসেমিয়া, অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ার ক্ষেত্রে সাফল্যের হার সবচেয়ে বেশি। এক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৮০-৯০ শতাংশ।

অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন দুই ধরনের। অটোলোগাস অ্যালোজেনিক। অটোলোগাসের ক্ষেত্রে রোগীর নিজের শরীর থেকে স্টেম সেল নিয়ে প্রতিস্থাপনে ব্যবহার করা হয়। আর অ্যালোজেনিকের ক্ষেত্রে রোগীর মা, বাবা, ভাই, বোন, ছেলে, মেয়ে অথবা আনরিলেটেড ডোনারের কাছ থেকে স্টেম সেল নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়।

ডা. দিলশাদ জাহান বলেন, অটোলোগাস বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয় লিম্ফোমা এবং মাল্টিপল মায়লোমার প্রথম দিকে। দুটিতে পুনরায় সংক্রমণ হলে অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্লান্ট করা যেতে পারে। ব্লাড ক্যান্সারের ক্ষেত্রে অ্যালোজেনিক বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। এছাড়া ব্লাড ক্যান্সার নয় এমন কয়েকটি রোগের ক্ষেত্রেও অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। যেমন মাইলোডিসপ্লাস্টিক সিনড্রোম, থ্যালাসেমিয়া, অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, বোন ম্যারো ফেইলিওর সিনড্রোম। অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে প্রথমে যদি তাদের টিস্যু টাইপিং ডোনারের সঙ্গে মিলে যায়, তাহলে সরাসরি অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। এখানে ব্লাড গ্রুপ মেলার দরকার নেই। শুধু টিস্যু টাইপিং মেলানো দরকার। অ্যাকিউট লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে অনেকগুলো ধারাবাহিক কেমোথেরাপি দিয়ে রোগীর রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়। পাশাপাশি অটোলোগাসের ক্ষেত্রেও কেমোথেরাপি দিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়। তারপর টিস্যু টাইপিং মিলে গেলে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়।

দেশে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে সাফল্যের হার ৭০-৮০ শতাংশ। উন্নত বিশ্বেও এর হার প্রায় একই। পাশাপাশি দেশে এর চিকিৎসা ব্যয় অনেকাংশে কম বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, বিশ্বের তুলনায় দেশে এটির চিকিৎসা ব্যয় প্রায় দশ ভাগের এক ভাগ। এছাড়া নিজের দেশে সুবিধামতো ডোনার পাওয়া যায়। লন্ডনে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে ব্যয় হয় কোটি টাকা, সিঙ্গাপুরে কোটি ৫০ লাখ টাকা, ভারতে ৬০-৭০ লাখ টাকা। সরকারি পর্যায়ে বন্ধ রয়েছে প্রতিস্থাপন কার্যক্রম। তবে বেসরকারিভাবে ১৫-২০ লাখ টাকা ব্যয় হয় দেশে। অটোলোগাস বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে - লাখ টাকা আর অ্যালোজেনিকের ক্ষেত্রে প্রায় ১৫-২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন