বোরো আবাদে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের অবনমন হয় না

নিজস্ব প্রতিবেদক

বোরো ধান চাষে ভূগর্ভস্থ পানিরস্তরের অবনমন হয় না। ধারণা (মিথ) আছে, এক কেজি বোরো ধান উৎপাদনে ৩০০০-৫০০০ লিটার সেচের পানি লাগে, কিন্তু বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, দেশের নিয়ন্ত্রিত সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাত্র ১০০০-১৬০০ লিটার সেচের পানি দিয়ে কৃষক সফলভাবে এক কেজি ধান উৎপাদন করছেন। শুধু সেচ বিবেচনায় পানির প্রয়োজন আরো কম। এর মধ্যে আনুমানিক ৪০ শতাংশ (৪০০-৬৫০ লিটার) সিপেজ পারকুলেশনের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানির সঙ্গে মিশে যায়। সুতরাং ধান উৎপাদনে প্রকৃত পানির প্রয়োজন হয় ৫৫০-৬৫০ লিটার/কেজি।

ব্রির উদ্যোগে অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিএসআইআরও), ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড এসিএআইআর আই অস্ট্রেলিয়ান এইডের সহযোগিতায় আয়োজিত গ্রাউন্ডওয়াটার সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড রাইস প্রডাকশন ইন নর্থ-ওয়েস্ট বাংলাদেশ শীর্ষক ওয়েবিনারে ব্রির গবেষণার এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে কৃষিমন্ত্রী . মো. আবদুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বোরো ধানে পানির অপচয় নিয়ে যে বিভ্রান্তি সমাজে প্রচলিত ছিল ব্রি সহযোগী সংস্থাগুলোর গবেষণা ফলাফলের মাধ্যমে সে বিভ্রান্তির অবসান হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ -সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের উচিত ধরনের বিভ্রান্তি নিরসনে একযোগে গবেষণা কাজ পরিচালনা করা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে জুম প্লাটফর্মে যুক্ত ছিলেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান . শেখ মো. বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রশীদ। বিশেষজ্ঞ প্যানেলে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক ইমিরেটাস বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য . এমএ সাত্তার মন্ডল এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক . হামিদুর রহমান।

দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সেচ পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রধান . মো. মনিরুজ্জামান এবং সিএসআইআরওর প্রিন্সিপাল রিসার্চ সায়েন্টিস্ট . মো. মাঈন উদ্দিন।

অধ্যাপক সাত্তার মন্ডল বলেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার জন্য বোরো ধানের আবাদই একমাত্র দায়ী নয়। শুষ্ক মৌসুমে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বিলে পানির প্রবাহ কম থাকায় বেজ ফ্লো হিসেবে ভূগর্ভস্থ পানির একটি অংশ নদীতে চলে যাচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন