কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াচ্ছে ভিয়েতনাম!

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার বাড়াচ্ছে ভিয়েতনাম ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের দেশগুলো যখন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে, তখন ভিয়েতনাম হাঁটছে উল্টো পথে। দেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন পরিকল্পনার একটি খসড়া প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হচ্ছে। আর সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ২০৩০ সালের মধ্যে ভিয়েতনামে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হবে। খবর রয়টার্স।

উন্নয়ন পরিকল্পনার খসড়ায় বলা হয়েছে, ভিয়েতনামের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে কয়লার ওপর আরো বেশি নির্ভরশীল হবে দেশটি। এমন একটি সময় তারা পরিকল্পনা হাতে নিল, যখন বিনিয়োগকারী বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো জলবায়ুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগই করতে চাইছে না।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা (পিডিপি ) অনুযায়ী, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে ২০৩০ সাল নাগাদ ৩১ দশমিক শতাংশ বিদ্যুৎ বেশি উৎপাদন হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দশকের শেষ পর্যন্ত ৪১ গিগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এখন সব উৎসমিলিয়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় ২০ দশমিক গিগাওয়াট।

তবে পরিকল্পনা সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি ভিয়েতনামের শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ভিয়েতনামের জনসংখ্যা কোটি ৮০ লাখ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠান ভিয়েতনামে তাদের উৎপাদনকেন্দ্র খুলছে। যেমন দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ইলেকট্রনিকস এলজি ইলেকট্রনিকস ইনকরপোরেশন ভিয়েতনামে উৎপাদনকেন্দ্র খুলেছে। এসব প্রতিষ্ঠান দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। তাই ধরনের উৎপাদনে সহায়তা করতেই বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে ভিয়েতনাম।

পিডিপি অনুযায়ী প্রত্যাশা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের জিডিপি বছরপ্রতি বাড়বে দশমিক শতাংশ হারে। এরপর ২০৪৫ সাল পর্যন্ত তার হার হবে দশমিক শতাংশ। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে হলে দেশটির এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ১১ হাজার ৫৯৬ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। ২০৩০ সালের পর ২০৪৫ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে হবে আরো ২২ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার। যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী সব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যায়, তাহলে দেশের বিদ্যুৎ খাতের সক্ষমতা দাঁড়াবে ৩২৯ দশমিক গিগাওয়াট।

তরলীকৃতসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো এখন কাজ করছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত, এদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে ২২ দশমিক শতাংশ। ২০৪৫ সাল নাগাদ পরিমাণ বেড়ে হবে ২৬ দশমিক শতাংশ। এছাড়া নন-হাইড্রো পুনর্ব্যবহারযোগ্য খাত থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে ২৫ দশমিক শতাংশ। উন্নয়ন পরিকল্পনায় এসব মিলিয়েই মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহের শুরুতে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন বলেছিলেন যে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াবে তার দেশ। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে মিশ্র উৎপাদন পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ভিয়েতনাম একটি উন্নয়নশীল দেশ যেটি এখনো অসংখ্য সমস্যার মোকাবেলা করছে। মুহূর্তে দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে চেষ্টা করছে। পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে একটি টেকসই শক্তিতে রূপান্তরের জন্য একটি স্থিতিশীল পরিকল্পনা প্রণয়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন