বেঁচে যাওয়া যাত্রীর বর্ণনায় করাচির উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মাঝেই নতুন এক বিপর্যয়ের মুখে পাকিস্তান। করাচিতে ভয়াবহ এক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯৭ জন। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের  (পিআইএ) ওই উড়োজাহাজটি ৯১ জন যাত্রী ও ৮ জন ক্রু নিয়ে করাচির একটি বসতির পাশে আছড়ে পড়ে। সেসব যাত্রীদের মাঝে বেশ কয়েকটি পরিবারও ছিল। যারা ঈদের ছুটিতে লাহোর থেকে উড়াল দিয়েছিল। 

এদিকে ভয়ঙ্কর এ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া দুই যাত্রীর একজন শুনিয়েছেন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। মোহাম্মদ জুবায়ের নামে ভাগ্যবান সেই যাত্রীর বণর্না মতে, অবতরণের চেষ্টা করার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। তবে আশ্চর্যজনকভাবে এই দুর্ঘটনায় বেঁচে গেছেন তিনি। এমনকি তার শরীরে মারাত্মক কোনো চোটও লাগেনি। 

জুবায়ের বলেন, কেউ বুঝতে পারেনি উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হতে যাচ্ছে। উড়োজাহাজটি এমনভাবে উড়ছিল যেন সবকিছু ঠিকঠাক আছে। 

উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই জুবায়ের জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, আমি চারপাশ থেকে কেবল চিৎকারের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। বাচ্চা থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা সবাই চিৎকার করছিল। আমি আগুন ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। আমার আশেপাশে কোনো মানুষও ছিল না- কেবল কান্না আর চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম। 

তিনি আরো বলেন, সবাই তখন কান্না করছিল এবং নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিল। আমি আমার সিটবেল্ট খুলে ফেলি এবং কিছু আলো দেখতে পাই। আমি সেই আলোর দিকে এগিয়ে যাই। এরপর নিরাপদে যাওয়ার জন্য আমি প্রায় ১০ ফুট উঁচু জায়গা থেকে লাফ দিয়ে নিচে নেমে আসি।

জুবায়ের ছাড়া এই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া অন্যজন হলেন ব্যাংক অব পাঞ্জাবের প্রেসিডেন্ট জাফর মাসুদ।

এদিকে উজাইর খান নামে আরেক প্রতক্ষদর্শী দুর্ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, প্রায় চারটি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে কেবল আগুন এবং ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। তারা আমার প্রতিবেশী। আমি আপনাকে বুঝাতে পারব না এই ঘটনা কতটা ভয়াবহ ছিল।

মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির জনপ্রিয় মডেল জারা আবিদও। এবছর পাকিস্তানের সেরা নারী মডেলের একটি পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। তার মৃত্যুতে দেশটির সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য মানুষ তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন