সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের নির্দেশনা

নিম্ন আদালতের জামিন শুনানি ভার্চুয়াল কোর্টে

বণিক বার্তা ডেস্ক

আদালতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিচারকাজ চালানো-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন শুনানি কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তির ভাষ্যমতে, বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলা এবং এর ব্যাপক বিস্তার রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১৬ মে পর্যন্ত সব আদালতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছুটির সময়ে বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর এলাকার মহানগর দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, বিশেষ জজ আদালতের বিচারক, সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজে অথবা তার অধীন এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেটকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০ এবং উচ্চ আদালতের জারীকৃত বিশেষ প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ অনুসরণ করে শুধু জামিনসংক্রান্ত বিষয়গুলো তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেয়া হলো।

প্রসঙ্গত, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ রেখে গত ২৬ এপ্রিল ভার্চুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। এজন্য সুপ্রিম কোর্টের রুলস কমিটি পুনরায় গঠন ও ভার্চুয়াল কোর্ট চালুর জন্য প্রয়োজনীয় আইনি প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওইদিন প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের ৮৮ বিচারপতি এ কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন। 

এ অবস্থায় গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে আয়োজিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এর দুদিন পর শনিবার ভার্চুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমতো হাইকোর্ট বিভাগ এ প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবেন।

অধ্যাদেশে আরো বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা আপাতত বলবত্ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাই থাকুক না কেন, যেকোনো আদালত এ অধ্যাদেশের ধারা ৫-এর অধীনে জারি করা প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) পালন সাপেক্ষে, অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষ, তাদের আইনজীবী, সাক্ষী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তির ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করে যেকোনো মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত, আপিল শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ বা আদেশ বা রায় দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি বা ক্ষেত্রমতো দেওয়ানি কার্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। কোনো ব্যক্তির ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলে ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা অন্য কোনো আইনের অধীন আদালতে তার সশরীর উপস্থিতির বাধ্যবাধকতার শর্ত পূরণ হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন