মেটাবলিজম বা বিপাক এমন একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া, যা আমাদের শরীরকে প্রতিনিয়ত সতেজ এবং সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে কার্যকর করতে সহায়তা করে।
পাশাপাশি এটি শ্বাস-প্রশ্বাস ও হূত্স্পন্দনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয়, মেটাবলিজমের কারণে প্রাণীদেহ টিকে থাকে ও বেড়ে ওঠে।
এটি প্রাণীর দেহের গঠন ঠিক রাখে।
মানবশরীরে মেটাবলিজমের প্রধান তিনটি কাজ রয়েছে বলে মনে করা হয়।
প্রথমত এটি খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করে; দ্বিতীয়ত প্রোটিন, লিপিড, নিউক্লিয়িক অ্যাসিড ও শর্করাজাতীয় খাদ্যকে দেহ গঠনের ব্লকে পরিবর্তিত করে এবং তৃতীয়ত দেহ থেকে নাইট্রোজেনজাতীয় উপাদানকে বর্জ্য হিসেবে বের করে দেয়।
বোঝাই যাচ্ছে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য মেটাবলিজমের গুরুত্ব কতখানি।
লিঙ্গভেদে মেটাবলিজমের হার ভিন্ন হয়ে থাকে।
এমনকি অনেক সময় শরীরের ওজনও মেটাবলিজমের হার ঠিক করে দেয়।
আবার খাদ্যের ওপরও মেটাবলিজমের হার নির্ভর করে।
আমরা প্রতিদিন নানা ধরনের খাবার খাই।
এসব খাবারের মধ্যে কোনগুলো মেটাবলিজমের হার কমিয়ে ফেলছে, বিষয়টি হয়তো অনেকেরই অজানা।
মেটাবলিজমের হার কমিয়ে ফেলে যেসব খাবার—
চিনির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অনেকেরই জানা। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন প্রতিদিন ২৫-৩০ গ্রাম চিনি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে বেশির ভাগ মানুষ ৪৮ চা চামচ চিনি খাচ্ছে। সম্প্রতি হোলিস্টিক হেলথ কোচ এবং টোটালি ফিট মামার প্রতিষ্ঠাতা কোর্টনি ডেয়লং এ কথা বলেন। তাহলে মিষ্টির চাহিদা বা তৃষ্ণা কীভাবে মেটানো যাবে? সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ফলের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। ফলও মিষ্টি তবে চিনির মতো নয়।
সব কার্বজাতীয় খাবার সমানভাবে তৈরি হয় না।
পরিশোধিত কার্বজাতীয় খাবার যেমন সাদা রুটি, সাদা ভাত প্রক্রিয়াকরণের সময় নির্যাস হারিয়ে ফেলে।
ফাইবারের পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টিগুণও কিছুটা কমে যায়।
এসব খাবার মেটাবলিজমের হার কমায়।
তাই এসব পরিশোধিত খাবারের চেয়ে সম্পূর্ণ কার্বসজাতীয় খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
যেমন শস্য, শাকসবজি, ফলমূল, শিমের বিচি ইত্যাদি।
খাদ্য ভালোভাবে বিপাক না হলে শরীর প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান পাবে না স্বাভাবিক।
শরীরের কথা ভেবে অধিকাংশ মানুষ ডায়েট করে থাকে।
চিকিৎসকদের মতে, ডায়েট চার্টে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার রাখার প্রবণতা মানুষের বেশি।
যেমন উদ্ভিজ্জ তেল, মুরগি ইত্যাদি।
অধিকাংশ সময় স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ ফ্যাটযুক্ত খাবার রাখা হয় না।
যার ফলে প্রদাহ তৈরি হয়, বিপাকে প্রভাব ফেলে।
এ
কারণে ওমেগা-৬ ও ৩-এর মধ্যে ভারসাম্য রেখে খাবার খেতে হবে।
দুগ্ধজাতীয় খাবার সবসময় ভালোভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় না।
এসব খাবার প্রদাহের সৃষ্টি করে, যা মেটাবলিজম কমাতে সহায়তা করে।
এগুলোর বিপরীতে আপনি বাদাম দুধ খেয়ে দেখতে পারেন।
অনেকেই আছে গম দিয়ে তৈরি খাদ্য খেতে পছন্দ করে।
গমের রুটি খান।
গম
অন্ত্র, লিভার ও ইমিউ নি সিস্টেমে প্রদাহজনিত চাপ তৈরি করে।
ডায়েটে কম প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখা উচিত নয়।
কারণ শরীরে প্রোটিন সংরক্ষণে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়।
খাবার খাওয়ার সময় প্রতিটি খাবার থেকে আপনি ২০-৩০ গ্রাম প্রোটিন পাচ্ছেন কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন।
মেটাবলিজম বা বিপাক কমিয়ে ফেলা খাদ্য উপাদান সম্পর্কে তো জানা হলো! এবার এসব খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
সূত্র: দ্য হেলদি