বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ ও নিজেকে তরুণ দেখাতে কতকিছুই না করা হয়।
সঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া, হূদরোগ অথবা দীর্ঘস্থায়ী রোগ নিয়ন্ত্রণে শরীর চর্চা করাসহ নানা কিছু।
কিন্তু ব্রেনের জন্য কিছু কি করা হয়? মানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ব্রেন বা মস্তিষ্ক।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ব্রেনকে সতেজ ও প্রখর রাখতে কিছু বিষয় মেনে চলা প্রয়োজন।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কোষ বা নিউরন তাদের মধ্যকার গাছের শাখ-প্রশাখার মতো সংযোগ হারিয়ে ফেলে।
এ
সংযোগ বা সিনাপসিস চিন্তা-ভাবনার জন্য প্রয়োজনীয়।
আক্ষরিক অর্থেই, সময়ের সঙ্গে আমাদের মস্তিষ্ক সে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
সমস্যা যেখানে সমাধানও সেখানে।
বর্তমানে কিছু গবেষণার ফলাফলে উঠে এসেছে, ব্যায়াম ব্রেনের অবক্ষয় কমাতে সহায়তা করে।
এজন্য চিকিৎসকরা শরীরকে নড়াচড়া করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ব্যায়ামের মধ্যে অ্যারোবিক এক্সারসাইজের কথা বলে থাকেন।
এ
ব্যায়াম রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন সঞ্চালনে উৎসাহ জোগায়, শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখে।
এ
ধরনের ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে দৌড়ানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদি।
ব্রেনকে খেতে দিতে হবে। এ আবার কেমন কথা? অবাক হওয়ার কিছু নেই। বয়সকালে ব্রেনকে সজীব ও কার্যকর রাখতে ব্রেনকে পাকস্থলীর মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করতে হবে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে। এ ধরনের খাবার ব্রেনকে সতেজ রাখার জন্যও উপকারী। বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরা। এছাড়া শিম, বাদাম এগুলোও খেতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পুষ্টিকর খাবার খাওয়া হচ্ছে কিনা।
ব্রেনকে যতটা পারা যায় কাজে লাগাতে হবে।
দুঃখের বিষয়, আমাদের ব্রেন ৩০ বছর বয়স থেকে ধীরে ধীরে কাজ কম করতে শুরু করে।
আগে ভাবা হতো, এ সমস্যার বোধ হয় কোনো সমাধান নেই।
কিন্তু মানুষ যেকোনো বয়সেই তার ব্রেনকে দ্রুত ও কার্যক্ষম করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রেন হলো লার্নিং মেশিন।
ব্রেনকে সমর্থ রাখতে নানা কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন।
যেমন পাজল মেলানো, পিং-পোং বা ব্রিজ তৈরির খেলা, নতুন ভাষা শেখা, বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে বনসাই তৈরি করা ইত্যাদি।
এসব কাজে ব্রেনকে ব্যস্ত রেখে আপনি আপনার ব্রেনকে সচল রাখতে পারেন।
বয়সকালে ব্রেনকে কার্যকর রাখতে শান্ত থাকা খুব দরকার।
সেসঙ্গে দুশ্চিন্তামুক্ত।
আমাদের ব্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো হিপ্পোক্যাম্পাস, যা স্মৃতি গঠনের প্রাথমিক স্থান হিসেবে পরিচিত।
মানসিক চাপ কিংবা দুশ্চিন্তার কারণে এ অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তাই যতটা পারা যায়, স্ট্রেসমুক্ত থাকা দরকার।
ইয়োগা, মেডিটেশন—এ ধরনের শান্ত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ব্রেনকে শান্ত ও প্রখর করতে পারেন।
ব্রেনকে যেমন খাটানোর কথা বলা আছে, তেমনি ব্রেনের বিশ্রামের কথাও বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
আর
ব্রেনের বিশ্রামের জন্য যা করতে হবে, তা হলো ঘুম।
জটিল কোনো কাজ করার আগে একটু ঘুমিয়ে নিন।
ভিডিও গেম নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পাজল মেলানোর মতো কাজ জেগে থাকা ব্যক্তির চেয়ে ঘুমে ঝিমুনি দেয়া ব্যক্তিরা সহজেই সমাধান করতে পারে।
এটা থেকে বোঝা যায়, ঘুমন্ত মস্তিষ্ক জটিল তথ্যের সমাধান করতে ব্যাপকভাবে সক্ষম।
ব্রেনকে আপনার ত্বক কিংবা শরীরের মতো তরুণ রাখতে একটু হাসতে হবে।
কারণ হাসি ব্রেনের জন্য সুখানুভূতির সৃষ্টি করে।
তাছাড়া হাসি ব্রেনের জন্য আনন্দদায়ক, এমনকি ‘নেশা’র
মতো। বিভিন্ন
গবেষণায় দেখা গেছে, হাস্যরস দুর্বল স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সক্ষম।
তাই বেশি বেশি হাসুন আর ব্রেনকে সচল রাখুন।
মজার ভিডিও, নাটক এসব দেখে হাসতে পারেন।
সূত্র: দ্য হেলদি