ফ্লুকে অবহেলা নয়...

ফিচার ডেস্ক

বছরের শুরুটা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুব একটা ভালো কাটছে না। কারণ করোনাভাইরাসের আতঙ্কে আতঙ্কিত বিশ্বের মানুষ। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসের সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। তাই বিশ্বজুড়ে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এ রোগের লক্ষণগুলো সাধারণ হাঁচি-কাশির মতোই। এ কারণে মানুষ আরো বেশি চিন্তিত। বোঝার উপায় নেই কোনটা সাধারণ ফ্লুজনিত রোগ আর কোনটা মারাত্মক ভাইরাস আক্রান্ত রোগ।

তাই ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এ সময়ে অনেক বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন। অনেকেই আছেন বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এখন না দিয়ে উপায় নেই। কেউ কেউ মনে করেন এটি সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত রোগ; বিশ্রাম আর প্রচুর পানি খেলেই সেরে যাবে। কিন্তু না, বিষয়গুলো এত হালকাভাবে নেয়া যাবে না। এই ফ্লু পরে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা মারাত্মক ব্যাধি হতে পারে। ফ্লুতে মৃতের সংখ্যা ২০২০ সালে এরই মধ্যে ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রেই ১৪০ থেকে ৮১০ হাজার ফ্লু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে পারে এবং গড়ে প্রায় ১২ হাজার থেকে ৬১ হাজার রোগী মারা যেতে পারে। যে কারণে চিকিৎসকরা বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার পরামর্শ দিচ্ছেন।

পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে এসব ভাইরাস কতটা মারাত্মক হতে পারে। ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। পরীক্ষা করতে হবে ফ্লু আক্রান্ত হয়েছেন কিনা। ভাইরাসজনিত রোগ নির্ণয়ে এখন অত্যাধুনিক যন্ত্র রয়েছে। কাজেই খুব দ্রুত ফল পাওয়া সম্ভব। শীতকালে ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

কিন্তু প্রশ্ন হলো কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

ফ্লুতে আক্রান্তের কিছু লক্ষণ রয়েছে। যদি দেখেন জ্বরের তীব্রতা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি, তখন অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এর পাশাপাশি শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, অবসাদ, শরীর ও মাথাব্যথা, বমিভাব অনুভব করলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসককে দেখাতে হবে। ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। যদি ধরা পড়ে যে আপনি ফ্লুতে আক্রান্ত, তাহলে ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না। কারণ এর চিকিত্সা রয়েছে। ফ্লুর ট্রিটমেন্টে ওষুধ রয়েছে, যা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

ওষুধের পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন। যেমন গরম পানি লবণ দিয়ে গড়গড়া করা, চায়ের সঙ্গে মধু যুক্ত করে খাওয়া, গরম ভাপ নেয়া। এ সময় স্যুপ খেতে পারেন, কারণ স্যুপে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।

এছাড়া ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যতটা সম্ভব ঘরের ভেতরে অবস্থান করতে হবে। বিশ্রাম নিতে হবে। এ অবস্থায় বাইরে অফিস কিংবা অন্য কোনো কাজে না বের হওয়াই ভালো। কারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা শ্বাসযন্ত্রের ভয়ানক সংক্রমণ, যা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শিশুদের ক্ষেত্রে একটু বেশিই যত্নবান হতে হয়। ফ্লুতে আক্রান্ত শিশুদের স্কুলে পাঠানো যাবে না। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার বিষয়েও জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। বাইরে থেকে ঘরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে হাত-মুখ-পা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। হাত না ধুয়ে মুখে হাত দেয়া উচিত হবে না।

সূত্র: হেলথ লাইন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন