ডিইউ চক্করে দুরন্ত ছুটে চলা

ফাহমিদা তাপসী

দুরন্ত ঘূর্ণির এই লেগেছে পাক/এই দুনিয়া ঘোরে বনবন বনবন/ছন্দে ছন্দে কত রঙ বদলায়, রঙ বদলায়সাইকেল নিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলার কোনো দৃশ্য কল্পনা করতেই মনে বেজে উঠেছে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের চমত্কার গানটি। রাস্তায় মোটরচালিত যানের আধিপত্য যখন বিস্তার লাভ করেনি, তখন কিন্তু এখান থেকে সেখানে ছুটে যাওয়ার ক্ষেত্রে দুই চাকার সাইকেলই ছিল ভরসা। শুধু বড়দের জন্যই নয় স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছেও এ বাহনই ছিল প্রয়োজন আর শখের জিনিস।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদার অনেক পরিবর্তন এসেছে। তবে প্রয়োজনের দিক থেকে শিক্ষার্থীদের কাছে সাইকেল বা দ্বিচক্রযানের আবেদন কমেনি এতটুকু। বিশেষ করে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় হল থেকে ক্লাসরুম আর ক্লাসরুম থেকে লাইব্রেরিতে যেতে হলে কিংবা ক্যাম্পাসের ভেতরে চলাচলের ক্ষেত্রে সাইকেল যেন ভরসা রাখার মতো বাহন। এসব কিছু বিবেচনা করেই ২০১৮ সালে চালু করা হয় জোবাইক সেবা। সে বছরই এ সেবা চালু হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর ধীরে ধীরে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চালু করা হয় ইটি। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয়েছে এ সেবা।ডিইউ চক্কর নামে এ সেবা চালু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহযোগিতায়।

এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী ডিইউ চক্কর অ্যাপটি মোবাইল ফোনে নামিয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন কাছাকাছি থাকা যেকোনো জোবাইক। অর্থাৎ কোনো শিক্ষার্থীর ফোনে যদি অ্যাপটি থাকে, তিনি অ্যাপের মাধ্যমে সার্চ দিলেই তাকে আশপাশে থাকা একটি জোবাইক পেতে সাহায্য করবে। এখন পর্যন্ত মোট ১০০টি জোবাইক ছাড়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জোবাইকের ২৪টি পার্কিং স্টেশন রয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি দেখভাল করার জন্য বর্তমানে সাতজন কর্মী কাজ করছেন। ব্যবহারকারীরা মূলত ডিইউ চক্কর চার্জিং পয়েন্টে এসে মোবাইল অ্যাপে টাকা রিফিল করার পর কিউআর কোড স্ক্যান করে বাইকগুলো আনলক করে চালাতে পারেন। নির্দিষ্ট দূরত্বের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া অর্থ কাটা হবে অ্যাপ থেকেই। পরে সাইকেল চালানো শেষে নির্দিষ্ট পয়েন্টে তা ম্যানুয়ালি লক করে রেখে দিতে হয়।

ডিইউ চক্কর চালু হয়েছে এক সপ্তাহের বেশি হয়েছে। তবে এর মধ্যেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ সেবা। জোবাইক সেবা চালু করায় কেমন সুবিধা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ব্যবহারকারী অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এ ধরনের সেবা চালু হওয়ায় সুবিধা হয়েছে বলেই জানান। নিয়মিত সাইকেলে যাতায়াত করা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মেঘ বলেন, বাসা থেকে আগে আমি এমনিতেই সাইকেল চালিয়ে আসতাম। তবে কখনো কখনো বিভিন্ন কারণে সাইকেলে আসা হতো না। ফলে এখন থেকে সুবিধা হলো। যদি কোনোদিন কোনো কারণে সাইকেল না আনতে পারি, তাহলে ক্যাম্পাসের ভেতরেই সাইকেল পাব। ক্যাম্পাসের ভেতরেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে হলে সাইকেল থাকলে সুবিধা হয়। কম সময়ে এখান থেকে সেখানে যাওয়া যায়।

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন