চার পদে ক্যাম্পাসেই চাকরির সুযোগ ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের

শফিকুল ইসলাম

ইউআইইউর অধ্যাপক দেওয়ান মো. ফরিদের সঙ্গে গবেষণাকর্মে নিয়োজিত রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রশান্ত কুমার দাস ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানেই পড়াশোনার অনেক খরচ—এমন ধারণাই প্রচলিত। তবে পড়াশোনার মান, গবেষণা ও সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে এখন জনপ্রিয় দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শিক্ষার্থীবান্ধব নানা উদ্যোগ এবং বিশ্বমানের পড়াশোনার সর্বোচ্চ আধুনিক সুযোগ-সুবিধাই আকর্ষণ করছে শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘‌অন ক্যাম্পাস জব’ ও গবেষণার সুযোগ। উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো মেধাবী ও দক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করার অপূর্ব সুযোগ দিচ্ছে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)। ক্যাম্পসেই রয়েছে খণ্ডকালীন ও পূর্ণকালীন চাকরির সুযোগ, যা শিক্ষা ব্যয় নির্বাহের পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীর মাসিক হাতখরচও চলে যায়।

সাধারণত সেমিস্টার বা বার্ষিক হিসাব অনুযায়ী চাকরির সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। ইনস্ট্রাক্টরের, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট এ চার পদে খণ্ডকালীন ও পূর্ণকালীন চাকরির সুযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের। এছাড়া প্রজেক্টভিত্তিক রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করতে পারেন শিক্ষার্থীরা। 

ইউআইইউর কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী প্রশান্ত কুমার দাস বলেন, ‘‌স্নাতকে পড়াশোনা অবস্থায় আমি টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (টিএ) হিসেবে কাজ শুরু করি। পরবর্তী সময়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তরের একটি প্রজেক্ট এবং টেকনো হ্যাভেন কোম্পানি লিমিটেডে কাজ করি। বর্তমানে ইউআইইউতেই রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করছি। পড়াশোনা অবস্থায় টিএ হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা আমার জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেছে। একদিকে যেমন আর্থিক সাপোর্ট, অন্যদিকে নিজের ফিল্ডে কাজের অভিজ্ঞতা ক্যারিয়ারে এক ধাপ এগিয়ে রাখে।’

ইউআইইউতে রয়েছে চারটি স্কুল। স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড  ইঞ্জিনিয়ারিং, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস, স্কুল অব হিউম্যানিটিস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস এবং স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেস। এখানে বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ইনস্ট্রাক্টর, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট  পোস্টগুলোয় কাজ করে থাকেন। তবে এ অন ক্যাম্পাস জবের ক্ষেত্রে সিজিপিএ ৩.৫০ থাকা আবশ্যিক। অর্থাৎ ভালো ফলাফল থাকলেই আপনি এ চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া আবেদনকারীদের মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এবং এক্সেলের দক্ষতা, সুন্দর ও সাবলীলভাবে কথা বলা এবং যোগাযোগের দক্ষতা রয়েছে কিনা এসবও যাচাই করা হয়। পড়াশোনা অবস্থায় ক্যাম্পাসে খণ্ডকালীন চাকরি করলে পড়াশোনার ক্ষতি হবে এমনটা ভাববার কারণ নেই। বরং যারা এ কাজের সঙ্গে যুক্ত তারা এগিয়ে থাকেন পড়াশোনা ও গবেষণা দুটোতেই। 

যেসব শিক্ষার্থী ইন্সট্রাক্টর হিসেবে চাকরিতে জয়েন করেন তাদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে দুটি থিওরি কোর্স অথবা একটি থিওরি কোর্স এবং দুটি ল্যাব কোর্স অথবা চারটি ল্যাব কোর্স নেয়ার সুযোগ থাকে। আর এসবের জন্য একজন শিক্ষার্থী মাসে বেতন পান সর্বোচ্চ ৩৩ হাজার টাকা। একজন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (টিএ) প্রতিদিন ৫-৮ ঘণ্টা কাজের সুযোগ পেয়ে থাকেন। সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা। মাসিক বেতন পান ২২ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া একজন গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্টের ক্ষেত্রে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার ১ ইউনিট কাজ করলে মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতন পায় একজন শিক্ষার্থী। আর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্টের ক্ষেত্রে সপ্তাহে ১০ ঘণ্টার ১ ইউনিট এবং ২০ ঘণ্টার ২ ইউনিট কাজ করলে মাসিক বেতন যথাক্রমে ৬ ও ১২ হাজার টাকা। শিক্ষার্থীদের ক্লাস টাইমের কথা বিবেচনায় রেখে বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পছন্দ অনুযায়ী টাইম স্লটের ব্যবস্থা রয়েছে।

একজন আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট হতে হলে কী কী দক্ষতা দরকার আর কী কাজ করতে হয় জানতে চাইলে ইউআইইউর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট (ইউজিএ) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘‌সিএসই বিভাগে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট হতে হলে সিজিপিএ ৩.৭০ এবং ৮০ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হয়। যেসব ল্যাব কোর্সে ইউজিএ দরকার তার একটি তালিকা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীরা পছন্দ অনুযায়ী এসব কোর্সে আবেদন করতে পারে। তবে কমপক্ষে ৯০ শতাংশ মার্ক থাকতে হয় ওই শিক্ষার্থীর। একজন ইউজিএ সাধারণত ক্লাস শেষে কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে সেটা বুঝিয়ে দেয়া, ক্লাসের বাইরে কাউন্সেলিং করা এবং অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন—এ তিনটি কাজ করে থাকেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন